বাংলাদেশ

শ্রমিক ধর্মঘটে বিভিন্ন জেলায় বাস বন্ধ, চরম ভোগান্তিতে মানুষ

নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে তৃতীয় দিনের মত দেশের বিভিন্ন জেলায় বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিকরা।

এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার সাধারণ যাত্রী। তারা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে নছিমন, করিমন ও ইজিবাইকে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।

গত সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই ধর্মঘট বুধবার তৃতীয় দিনের মত অব্যাহত রয়েছে। পরিবহন শ্রমিক নেতাদের দাবি- আইন সংশোধনের পর এটি বাস্তবায়ন করা হোক। এটা না করা পর্যন্ত তাদের এ ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।

মঙ্গলবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, সাতক্ষীরা, ঝালকাঠি, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় কোনো বাস চলছে না।

এছাড়া ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে পরিবহন শ্রমিকরা।

বুধবার সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল, কাঁচপুরসহ ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্নস্থানে অবস্থান নিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। তারা সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন।

সাতক্ষীরা থেকে খুলনা, যশোর, শ্যামনগর, আশাশুনিসহ সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় হাজার হাজার যাত্রী দুর্ভোগে পড়েছেন।

সাতক্ষীরা জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ জানান, নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছে। তারা চান, আগে এটি সংশোধন করা হোক। এরপর এটি বাস্তবায়ন করা হোক।

নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে ঝালকাঠির আট রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা।

বুধবার সকালে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গেছে ঝালকাঠি-বরিশাল, ঝালকাঠি-ঢাকাসহ অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার আট রুটে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

ঝালকাঠি থেকে বরিশাল, বরিশাল থেকে ঝালকাঠি হয়ে খুলনা, বরিশাল থেকে ঝালকাঠি হয়ে পিরোজপুর, বরিশাল থেকে ঝালকাঠি হয়ে ভান্ডারিয়া, বরিশাল থেকে ঝালকাঠি হয়ে মঠবাড়িয়া, বরিশাল থেকে ঝালকাঠি হয়ে পাথরঘাটা, ঝালকাঠি-আমুয়া, ও ঝালকাঠি-ঢাকার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। তারা বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে বিকল্প পরিবহনে যাত্রা করছেন।

খুলনায় অভ্যন্তরীণ রুটে বুধবার সকাল থেকে বাস চলাচলের কথা থাকলেও তা হয়নি। বুধবার তৃতীয় দিনের মতো মালিক-চালকরা বাস বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করছেন।

এদিকে, সকালে বাস ছাড়বে এমন খবরে সোনাডাঙ্গা কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনাল, রয়্যাল ও শিববাড়ির মোড়ে যাত্রীরা দূর-দূরান্তে যাত্রার উদ্দেশ্যে আসলেও বাস না ছাড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েন তারা। নগরীর অধিকাংশ বাস কাউন্ডার বন্ধ রয়েছে।

পরিবহন ধর্মঘটের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপরে পরিবহণ মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ রুটে বুধবার সকাল থেকে বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়। খুলনা সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই পক্ষের আলোচনা শেষে মধ্যস্থতার প্রেক্ষিতে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা চলমান পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।