২০১৯ সালে রাজধানীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মহামারি আকার ধারণের ক্ষেত্রে ঢাকা দক্ষিণ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আংশিক গাফিলতি রয়েছে বলে উঠে এসেছে অনুন্ধান কমিটির প্রতিবেদনে। তবে এই পরিস্থিতির জন্য দুই সিটি করপোরেশনকে এককভাবে দায়ী করা যায় না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মূলে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থতার কারণ খতিয়ে দেখতে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত বিচারিক অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনে এই কথা বলা হয়েছে। কমিটি এই প্রতিবেদনে ১০টি সুপারিশমালাও দিয়েছে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত বলেন, প্রতিবেদিনটি হলফনামা করা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার এটি আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ডেঙ্গু যাত্রা ও ২০১৯ সালের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলা হয়, রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) ও সিডিসির তথ্য মতে বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বরের অফিসিয়াল প্রাদুর্ভাব ছিল ২০০০ সালে। ওই বছরের পাঁচ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডেঙ্গু মহামারি রূপ ধারণ করে ২০১৯ সালে। সরকারি হিসাবে ২০১৯ সালে এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়।
প্রতিবেদনের মতামত অংশে বলা হয়, বিশেষজ্ঞগণের মতামত এবং অন্যান্য প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ২০১৯ সালে ডেঙ্গু মহামারি প্রকোপের ক্ষেত্রে ঢাকা দক্ষিণ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আংশিক গাফিলতি থাকলেও এককভাবে এই দুটি সিটি করপোরেশনকে দায়ী করা যায় না। তাছাড়া অনুসন্ধানকালে ২০১৯ সালে ডেঙ্গু মহামারি প্রকোপের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তির একক কোনো গাফিলতি অনুসন্ধান কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয়নি।
গত বছরের ৪ জুলাই এক স্বপ্রণোদিত এক আদেশে ঢাকা সিটিতে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়াসহ এডিস মশা নির্মূল ও ধ্বংসে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়ে দিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
ওই আদেশের ধারবাহিকতায় গত বছরের ১২ নভেম্বর ঢাকা জেলা জজের নেতৃত্বে দুই সদস্যের কমিটিকে বিষয়টি তদন্ত করতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। কমিটির অপর সদস্য হলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবের নিচে নয় এমন একজন কর্মকর্তা। এই কমিটিকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
পরে কমিটি দুই মাস সময় চেয়ে আবেদন করলে ২১ জানুয়ারি বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রতিবেদন দাখিল করতে ১ মার্চ পর্যন্ত সময় দেন। পরে সময় বাড়িয়ে তা ৯ মার্চ করা হয়।