বাংলাদেশ

করোনাভাইরাস: বাংলাদেশে গুজব ছড়িয়ে থানকুনি, রং চা খাওয়ার হিড়িক

করোনাভাইরাস নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বেশ কিছু গুজব। এতে জনমনে আতঙ্ক বাড়ছে । ফেসবুকের মত সামাজিক মাধ্যমে চোখ রাখলেই প্রতিদিন এমন গুজব চোখে পড়ে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে জনমনে আতংক সৃষ্টি করছে রং চা খাওয়া, বাচ্চা ছেলের জন্ম-মৃত্যু নিয়ে গুজব। কদিন আগে থানকুনি পাতা খেলে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি মিলবে এমন গুজব দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। যা জনসাধারনের এমনভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যে সহজেই বিশ্বাস করার মত।

গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সোস্যাল মিডিয়ার সচেতন ব্যবহারকারীরা। অনেকেই এ গুজবের মূল হোতাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

‘রঙ চা খেলে নাকি মুক্তি মিলবে প্রাণঘাতী করোনা থেকে।' 'সাথে দিতে হবে আদা, দারুচিনি, লং।' এমন বার্তা দিয়ে জন্মের ৫ মিনিটের পরই নাকি এক নবজাতক মারা গেছে। কেউ কেউ দাবি করছেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা থেকে খবরটি সিলেট শহরে পৌঁছে। আবার কেউ দাবি করেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মীরপুরে নাকি বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় একটি নবজাতকের জন্ম হয়েছে। অপর একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার আত্বীয় এক মহিলার নবজাতক শিশু এমনটি বলে মৃত্যুবরণ করেছে বলে স্ট্যাটাস দেন। একেক জন একেক এলাকা থেকে সামাজিক যোগাযেগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে বলে দাবি করছেন। এরপর থেকেই সিলেটজুড়ে রঙ চা খাওয়ার হিড়িক পড়ে। অনেকে গুজব জেনেও চা খাচ্ছেন।

এসব নিছক গুজব বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলাম। তিনি সিলেটবাসীকে কোনো প্রকার গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এসব গুজব যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়াচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে, জন্মের ৫ মিনিট পর এক শিশু বলেছে আদা, লং, গোলমরিচ ও কালোজিরা দিয়ে চা বানিয়ে খেলে মরণঘাতী করোনাভাইরাস হবে না। এ কথা বলার পরপরই শিশুটি মারা যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে এমন কথা ছড়িয়ে পড়েছে উত্তরের বিভিন্ন এলাকায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়েছে এ কথা। এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা হৈচৈ। কেউ বলছেন শিশুটি বগুড়ায় জন্ম নিয়েছে, আবার কেউ বলছেন রংপুরে, কেউবা বলেছেন নীলফামারী-লালমনিরহাটের কথা।

গত মঙ্গলবার গভীর রাতে বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া ও উজিরপুর উপজেলায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে- তিনটি থানকুনিপাতা খেলে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। তবে ফজরের নামাজের আগেই এ পাতা খেতে হবে। এ গুজব খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দিবাগত রাত দুইটা থেকে ফজর নামাজের আগপর্যন্ত পাতা খাওয়ার হিড়িক চলে। কোথাও কোথাও থানকুনিপাতা খেতে মাইকযোগে আহ্বান জানানো হয়।