বাংলাদেশ

করোনা নয়, লকডাউন আমাদের নিঃস্ব করেছে

‘করোনার চাইতে লকডাউন আমাগো নিঃস্ব করেছে। ঢাকায় চার জনের সংসার, ছেলে মেয়ে ‌স্কুলে পড়ে। বাড়ি ভাড়া দিতে হয়। আজ প্রায় এক মাস কোন ইনকাম নেই। পেট তো আর কোন বিধি-নিষেধ মানতে চায় না। জীবনের সব পুঁজি দিয়ে  ভ্রাম্যমাণ এই টং দোকানটা আমার একমাত্র সম্বল। রাস্তায় গাড়ি চলছে, অফিস চলছে, কলকারখানা, গার্মেন্টস চলছে, হোটেল চলছে শুধু আমরাই না খেয়ে আছি, আমাগো দোকানেই বন্ধ।’  

কথাগুলো বলছিলেন সেগুনবাগিচা এলাকার টং দোকান ব্যবসায়ী মোঃ মিন্টুর। বুধবার (২১ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় বন্ধ রাখা টং দোকানেরে সামনে দাঁড়িয়ে বলা তার কথাগুলো মেশানো ছিলো দুঃখ, আক্ষেপ, অভিযোগ ও ক্ষোভ।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত লকডাউন চলছে। দ্বিতীয় দফা লকডাউনের আজ শেষ দিন। সরকার আরও এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে। এতে হকার, ভাসমান দোকান এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম বিপদে। লকডাউনে খপ্পড়ে পড়ে অনেকেই আজ নিঃস্ব, পথে বসেছে।

সরকারের লকডাউনের যৌক্তিকতায় প্রশ্ন তুলে মিন্টু জানালেন, সরকার কোন যুক্তিতে আমাদের মতো গরিবের দোকান বন্ধ রেখেছে। আমাদের জন্য কি কোন সাহায্যের ব্যবস্থা করেছে। প্রায় এক মাস হচ্ছে, এখনো পাইনি কোন সাহায্য ও সহযোগিতা। কিভাবে পরিবারের সংসার চালাব।  

মিন্টুর মতো আরেক ভাসমান ব্যবসায়ী জানালেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে এটা আমরা জানি কিন্তু এভাবে লকডাউন দিলে আমাদের পেটে লাথি মারা ছাড়া আর কিছু নয়। যদি এমন হতো যে, কোন কিছুই চলবে না সব বন্ধ থাকবে তাহলে ঠিক ছিলো, কিন্তু সবকিছু চলবে আর আমরা দোকান করতে পারবো না! এটা মানতে কষ্ট হয় আমাদের।

দোকানদারদের অভিযোগ, সরকার গরিবদের মেরে করোনাভাইরাস ধ্বংস করতে চাচ্ছে।

সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে হকার ও ভাসমান ব্যবসায়ীরা জানান, সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ তাড়াতাড়ি এই লকডাউন খুলে যেন দেয়। বেশি কিছু নয় ডাল ভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে চাই। আজ অনেক দিন ধরে আমার এই চায়ের দোকান খুলতে পারছি না। এখন এমন দিন যাচ্ছে বেশিরভাগ সময় না খেয়ে থাকি। আমরা মনে করি করোনা নয় সরকারের দেয়া লকডাউন আমাদের নিঃস্ব করে দিয়েছে। আমরা চাই আমাদের দিকে তাকিয়ে সরকার লকডাউন খুলে দিক।   এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/বি