বাংলাদেশ

'আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে গুম করে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে'

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে রুদ্ধ ও গুম করে দেশে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেও ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে পারেনি। শেখ হাসিনাও ভোটারবিহীন একদলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসেছে। কিন্তু তিনিও বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন না। জনগণের সাথে যুদ্ধ করে অতীতে কোন স্বৈরাচার বেশী দিন টিকে থাকতে পারেনি, শেখ হাসিনাও পারবেন না।
এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, এদেশের মানুষের রাজনৈতিক সংস্কৃতিই হচ্ছে জোর-জুলুম ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করা। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এদেশের মানুষ জিন্নাহ-আইয়ূবের স্বৈরশাসনকে হটিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করেছেন গণতন্ত্রের জন্যই। তাই এখানে কোন স্বৈরাচার কখনও স্থায়ী হয়নি, হবেও না।
একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও এক সময়কার তুখোড় এই শ্রমিক নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এদেশে আবারও গণতন্ত্র এবং মানুষের ভোটাধিকার ফিরে আসবে। তার কারণ হচ্ছে, আওয়ামী লীগেরও অধিকাংশ কর্মী-সমর্থক চান না যে, মুষ্টিমেয় কয়েকজন নেতাকর্মীর হাতে অর্থ ও ক্ষমতা পুঞ্জিভুত হোক, আর তাদের অবৈধ বিত্ত-ক্ষমতার যাঁতাকলে পিষ্ট হোক তৃণমূলের একজন কর্মী-সমর্থক কিংবা একজন সাধারণ মানুষ। তাই জোর-জবরদস্তি করে কেউ বেশিদিন ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে চাইলে অতীতে এদেশের জনগণ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এবারও তাই হবে। খোদ আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেও প্রতিরোধের ডাক উঠবে। কারণ আওয়ামী লীগেও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা রয়েছেন, যারা অন্যায়-অত্যাচারকে বেশিদূর যেতে দেন না। তাই দেশে এখন যে স্বৈরশাষন চলছে তা সাময়িক।
নিজের দল বিএনপি প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, বিএনপি গণ-মানুষের দল। দমন-পীড়ন চালিয়ে বিএনপিকে কখনো নিশ্চিহ্ন করা যায়নি, যাবে না। কারণ, দেশের সিংহভাগ মানুষ বিএনপিকে ভালবাসে। দেশের জনগণ প্রতিটি ক্রান্তিলগ্নে বিএনপির পাশে দাঁড়িয়েছে এবং সংকট থেকে উত্তরণে সবসময় পাশে থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে শক্তি ও সাহস দিয়েছে। মানুষ গণতান্ত্রিক পরিবেশে ভোটাধিকার ফিরে পেলেই বিএনপির এই সংকট থাকবে না।
এক সময়কার এই বাম রাজনীতিক আলাপচারিতায় আরো বলেন, রাজনীতিতে প্রতিরোধ-প্রতিবাদ অতীতেও হয়েছে এমনকি প্রতিহিংসারও নজির হয়তো রয়েছে। কিন্তু গুম-খুনের মতো অপরাজনীতি অতীতে কখনও হয়নি। বর্তমান গুমের রাজনীতি ফ্যাসিবাদকেও হার মানায়।