বাংলাদেশ

পারিবারিক কাজে সরকারি গাড়ি

সর্বোচ্চ মহলের নির্দেশের পরও বন্ধ হচ্ছে না সরকারি গাড়ির যথেচ্ছ ব্যবহার। বাড়ির বাজার, ছেলে-মেয়েদের স্কুলে আনা-নেওয়াসহ পারিবারিক যেকোনো কাজে হরদম পুড়ছে সরকারি টাকায় কেনা জ্বালানি তেল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু সরকারি গাড়ির অপব্যবহার বন্ধ করতে পারলেই ৫০ ভাগ জ্বালানি সাশ্রয় করা সম্ভব হতো।

বিদ্যুৎ বিভাগের গাড়িটি কাওরানবাজারে আসে সোমবার সকাল ৯টায়। কর্মচারী বাজারে ঢুকলে চালক গাড়িতেই থাকেন। বাজার শেষে ঘণ্টা খানেক পরে ফেরেন ওই কর্মচারী। আর এই পুরো সময়টাতে গাড়ি চালু রেখে এসিতে বিশ্রাম নেন চালক।

চালক বলেন, গাড়ি বিদ্যুৎ বিভাগের। আমরা এখানে আসছি বাজার করতে। তিনি কিনতে গেছেন, আমি দাঁড়িয়ে আছি। এমন কিছু করবেন না, যাতে আমার ক্ষতি হয়।

কোনো সরকারি কাজে নয়, যে বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশে সারাদেশে লোডশেডিং চলছে, তাদেরই এক কর্মকর্তার বাসার বাজার করতেই এত আয়োজন। যা স্বীকারও করেন এই চালক।

পাশেই দেখা গেল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আর রাজস্ব ভবনের আরও দুটি গাড়ি। এ দুটোও এসেছে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বাসার বাজার নিতে। প্রতিদিনই এমন অনেক সরকারি গাড়ি আসে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বাসার বাজার নিতে।

আরেক চালক বলেন, স্যারের আলাদা গাড়ি। এটা বাসার, ম্যাডামের নামে আছে। এটা নিয়ে বাজার করতে আসছি। ম্যাডাম চড়ে এটাতে।

রাজধানীর বেইলী রোড, যেখানে রয়েছে কয়েকটি স্কুল ও কলেজ। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুরু আর ছুটির সময় সরকারি গাড়ির লাইন লেগে যায়। বেশির ভাগ সরকারি গাড়ি আসে কর্মকর্তার সন্তানদের আনা নেওয়ার জন্য।

আরেক চালক জানান, তিনি স্যারের মেয়েকে নিতে এসেছেন। অথচ ব্যক্তিগত কাজে সরকারি গাড়ি ব্যবহার বন্ধে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বারবার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গাড়ি নিয়ে যেন অযথা ঘোরাঘুরি না করি। গাড়ি ব্যবহারের ব্যাপারে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গাড়ির ব্যবহারটা যেন ঠিকভাবে হয়।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারি গাড়ি ব্যবহারে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, প্রত্যেকটা সরকারি অফিসের গাড়ি বন্ধ করে দিক। যারা সরকারি গাড়িতে আসা-যাওয়া করে, সবাইকে বলে দেওয়া হোক গণপরিবহনে আসা-যাওয়া করতে। রাতারাতি অর্ধেক জ্বালানি বেঁচে যাবে। গণপরিবহন খাত ছাড়া ব্যক্তিগত পরিবহন খাত ও সরকারের পরিবহন খাতে যদি সিদ্ধান্ত নেই তাহলে এটা জ্বালানি ব্যয় ৫০ থেকে ৬০ ভাগ কমিয়ে ফেলা কোনো ব্যাপারই না।   এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/বি

[এলএ বাংলাটাইমসের সব নিউজ আরও সহজভাবে পেতে ‘প্লে-স্টোর’ অথবা ‘আই স্টোর’ থেকে ডাউনলোড করুন আমাদের মোবাইল এপ।]