বাংলাদেশ

জেদ্দা থেকেই দুর্ভোগ, অভিযোগ হাজিদের

দু-দুটি দুর্ঘটনার স্মৃতি নিয়ে হজ করে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা তাদের ভোগান্তির কথা জানিয়ে ব্যবস্থাপনা নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন। যাত্রীদের এই অভিযোগের বিষয়ে বিমানের কর্মকর্তারা সৌদি আরবের জেদ্দা বিমান বন্দরের অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করেছেন। গত সোমবার হজ ফেরত যাত্রা শুরুর পর থেকে ফ্লাইটে দেরি নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে আসছিলেন হাজিরা। এর সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে লাগেজ না পাওয়ার বিড়ম্বনা। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ফেরত আসা কয়েকজন হাজি লাগেজ না পাওয়ার কথা জানান। বেলা সাড়ে ১২টার কিছু পরে শাহজালাল বিমানবন্দরে নামার পর পটুয়াখালীর নজরুল ইসলাম বলেন, “লাগেজ পাচ্ছি না। কখন পাব, তাও জানি না।” জেদ্দা থেকে ফ্লাইটে দেরির ভোগান্তির কথা জানিয়ে ঢাকায় এসে লাগেজ না পাওয়ার কথা বলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের লতিফা বেগমও। একই বিড়ম্বনার শিকার ঝিনাইদহের আমিনুল ইসলাম বলেন, “২৪ ঘণ্টা এয়ারপোর্টে বসেছিলাম। এখানে এসে দেখি লাগেজ নাই। এই দুর্ভোগ কোনো অংশেই ক্রেইন দুর্ঘটনা বা মিনার ঘটনার চেয়ে কম না।” এবার হজ শুরুর আগে মসজিদুল হারামে সংস্কার কাজের জন্য রাখা একটি ক্রেইন উল্টে পড়ে শতাধিক নিহত হন। হজের মধ্যে প্রতীকী শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের সময় পদদলিত হয়ে মারা যান অন্তত সাত শতাধিক। দুটি ঘটনার জন্যই সৌদি আরবের হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যা থেকে প্রতি বছর দেশটির অর্থনীতিতে বিদেশি মুদ্রা যোগ হয়। হজের ব্যবস্থাপনায় গলদ নিয়ে প্রশ্ন উঠার পর এবার বাংলাদেশি হাজিদের কাছে জানা গেল বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনার কথা। পটুয়াখালীর নজরুল বলেন, “দুর্ভোগের কথা কী বলব? আমাদের আজকের ফ্লাইট ছাড়ার ছিল গতকাল সকাল ৮টা ২০ মিনিটে। সেখানে ফ্লাইট ছেড়েছে রাত ২টায়।” দুর্ঘটনার স্মৃতি নিয়ে হাজিরা ফিরছেন, তবে দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না চাঁপাইনবাবগঞ্জের লতিফা বলেন,“ গতকাল ভোর থেকে আমরা জেদ্দা বিমানবন্দরে ছিলাম। ওখানে খুব গরম, এর মধ্যে এয়ারপোর্টের সামনে রাস্তায় আমাদের আমাদের বসে থাকতে হয়েছে। “একে তো গরম, তারপর পানি নাই, বিশ্রামের জায়গা নাই। কখন প্লেন আসবে, তা ও জানি না।” নোয়াখালীর বজলুর রশিদ বলেন, “আমরা তো কোনোভাবে কাটিয়ে ‍দিয়েছি, সমস্যা হয়েছে মহিলাদের। রাস্তায় বসে থাকতে হয়েছে। অন্যান্য দেশের হাজিরা টার্মিনালে ঠিকই বিশ্রামের জায়গা পেয়েছে। আমরাই পাইনি।” ফ্লাইটে দেরির কারণ ব্যাখ্যা করে বুধবার বিমান একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। লাগেজ না পাওয়ার বিষয়ে বিমানের জনসংযোগ কর্মকর্তা তাসনিম আক্তার বলেন, “আসলে মূল সমস্যা হচ্ছে জেদ্দা টার্মিনালে। “এমনিতে প্রতিবছর জেদ্দা কর্তৃপক্ষ আমাদের যাত্রীদের চেকিংয়ে বেশি সময় নেয়। এ বছর ক্রেইন দুর্ঘটনা ও মিনা ট্র্যাজেডির পর চেকিংয়ের মাত্রা আরও বাড়ানো হয়েছে। লাগেজ লোডও হচ্ছে দেরিতে।” বিষয়টি নিয়ে জেদ্দা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে জানিয়ে তিনি আশ্বস্ত করেছেন, পরের ফ্লাইটে লাগেজ চলে আসবে।