বাংলাদেশ

চূড়ান্ত রায়েও নিজামীর ফাঁসি বহাল

মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী
অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর আমির
মতিউর রহমান নিজামীর (৭২) বিরুদ্ধে
ট্রাইব্যুনালের দেয়া ফাঁসির রায়
বহাল রেখেছেন সুপ্রীম কোর্ট।
একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ
ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের
বিরুদ্ধে করা নিজামীর আপিল
আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন
সর্বোচ্চ আদালত।
বুধবার সকাল ৯টা ০৫ মিনিটে দেশের
এই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর
মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার
সংক্ষিপ্ত আকারে চূড়ান্ত এ রায়
দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার
সিনহার নেতৃত্বে ৪ সদস্যের আপিল
বেঞ্চ।
বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন—নাজমুন
আরা সুলতানা, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও
হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
নিজামীকে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড
এবং হত্যা-গণহত্যা ও ধর্ষণসহ
সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির
(ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) প্রমাণিত
৮টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে
৪টিতে ফাঁসি ও ৪টিতে যাবজ্জীবন
কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর
মধ্যে ৩টিতে ফাঁসি ও ২টিতে
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ বহাল
রেখেছেন আপিল বিভাগ। অন্য
তিনটিতে চূড়ান্ত রায়ে দণ্ড থেকে
খালাস পেয়েছেন নিজামী, যার
মধ্যে একটিতে ফাঁসি ও দু’টিতে
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ছিল
ট্রাইব্যুনালের রায়ে।
ট্রাইব্যুনালে মোট ১৬টি
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ
আনা হয়। এর মধ্যে ৮টি অর্থাৎ ১, ২, ৩,
৪, ৬, ৭, ৮ ও ১৬ নম্বর অভিযোগ
প্রমাণিত হয়েছিল ট্রাইব্যুনালের
রায়ে।
প্রমাণিত চারটি অর্থাৎ সাঁথিয়া
উপজেলার বাউশগাড়িসহ দু’টি গ্রামে
প্রায় সাড়ে ৪০০ মানুষকে গণহত্যা ও
প্রায় ৩০-৪০ জন নারীকে ধর্ষণ (২
নম্বর অভিযোগ), করমজা গ্রামে ১০
জনকে গণহত্যা, একজনকে ধর্ষণসহ
বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ (৪
নম্বর অভিযোগ), ধুলাউড়ি গ্রামে ৫২
জনকে গণহত্যা (৬ নম্বর অভিযোগ)
এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ও
সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির (১৬
নম্বর অভিযোগ) দায়ে নিজামীকে
ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছিল।
এর মধ্যে ৪ নম্বর অভিযোগের দায়
থেকে নিজামীকে খালাস দিয়েছেন
আপিল বিভাগ।
অন্য চারটি অর্থাৎ পাবনা জিলা
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাওলানা
কছিমুদ্দিন হত্যা (১ নম্বর অভিযোগ),
মোহাম্মদপুরের ফিজিক্যাল ট্রেনিং
ইনস্টিটিউটে পাকিস্তানি সেনা,
রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর
ক্যাম্পে নিয়মিত যাতায়াত ও
মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র
(৩ নম্বর অভিযোগ), বৃশালিখা
গ্রামের সোহরাব আলী হত্যা (৭ নম্বর
অভিযোগ) এবং রুমী, বদি, জালালসহ
সাত গেরিলা যোদ্ধা হত্যার
প্ররোচনার (৮ নম্বর অভিযোগ) দায়ে
তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
এর মধ্যে ১ ও ৩ নম্বর অভিযোগের
দায় থেকে চূড়ান্ত রায়ে খালাস
পেয়েছেন নিজামী।