বাংলাদেশ

এসব নিয়ে মাথা ঘামান না প্রধানমন্ত্রী: কাদের

দলের নেতা-কর্মীদের মন শক্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নির্বাচন সামনে রেখে বিদেশিদের তৎপরতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ওটা এটা দেখলে হঠাৎ মন খারাপ হয়ে যায়। আমেরিকা এল বুঝি, নিষেধাজ্ঞা দিল বুঝি, ভিসা নীতি এল বুঝি, কে কী দিল—এসব নিয়ে বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাথা ঘামান না। আমরা বন্ধুহীন নই। দেশেও আমরা বন্ধুহীন নই, বিদেশেও নয়। আবারও জানিয়ে দিচ্ছি।’ আজ মঙ্গলবার বিকেলে তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী সাংগঠনিক জেলার আওয়ামী লীগের নেতাদের মতবিনিময় সভায় সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন। এখন আওয়ামী লীগের সুদিন, এটা ধরে নিতে বারণ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘এখন অন্ধকারের শক্তি আমাদের চ্যালেঞ্জ করছে। অন্ধকারের শক্তির সঙ্গে আমাদের লড়তে হবে। যে শক্তির বিরুদ্ধে একাত্তর সালে আমরা লড়েছি। পঁচাত্তরের পর যে লড়াই আমরা করেছি। আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। অনেকে ভেবেছিল ১০০ বছর পরও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে না। অনেকে ভেবেছিল এ পার্টির আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই।’ দেশে ফিরে শেখ হাসিনার দলের হাল ধরার কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শেখ হাসিনা এলেন গণতন্ত্রকে শৃঙ্খল মুক্ত করতে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে। জয় বাংলা তখন নির্বাসিত, ৭ মার্চ নিষিদ্ধ, বিজয় এবং স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচিতে বঙ্গবন্ধু নিষিদ্ধ, সেই দুঃসময়ের কথা এখানে যাঁরা বসে আছেন, সবাই জানেন। অনেকেই নির্যাতিত। জেলে দুঃসময় কাটিয়েছেন, বাড়িঘরে থাকতে পারেননি।’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সেদিন ঠাকুরগাঁওয়ে দেখলাম কোন কর্মী অ্যারেস্ট (গ্রেপ্তার) হলো। তার জন্য তিনি অঝোরে কাঁদছেন। তারপর আবার দেখলাম ঢাকায় এসে প্রতিদিনই কান্না। অস্ত্রসহ ছয় ছাত্রদলের ক্যাডার ধরা পড়েছে, চোখের পানিতে ফখরুলের বুক ভেসে যায়। এই অপরাধীদের জন্য? অপরাধীদের জন্য আপনি কাঁদেন, লজ্জা করে না? যারা অস্ত্র কিনে ব্যবসা করে, প্রকাশ্যে ধরা পড়ে, তাদের জন্য আপনি কাঁদেন? এসব অস্ত্র জোগাড় করছেন কেন? নির্বাচন প্রতিরোধ করবেন? ২০১৩-১৪ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটাবেন? বাংলাদেশের সেই দিন আর আসবে না।’ নেতা-কর্মীদের শপথ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ভোট চুরি যারা করে তাদের হাতে, লুটপাটকারীর হাতে, দুর্নীতিবাজদের হাতে আমরা দেশ দেব না। যে হাত আগুন নিয়ে পোড়াতে আসবে, সেই হাত পুড়িয়ে দেবেন। যে হাত লাঠিসোঁটা নিয়ে ভাঙচুর করতে আসবে, সে হাত ভেঙে দেবেন। কুকুর যেমন তেমন মুগুর। দেশকে বাঁচাতে হলে লড়তে হবে, লড়াই করে দেশকে বাঁচাতে হবে। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হবে, মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে হবে।’ আগামী ২ সেপ্টেম্বর আগারগাঁওয়ে পুরোনো বাণিজ্য মেলা মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুধী সমাবেশে ভাষণ দেবেন। ওই দিন ঢাকা জনসমুদ্রে রূপ নেবে বলে মতবিনিময় সভায় জানান ওবায়দুল কাদের। ঢাকা উড়াল সড়ক উদ্বোধনের পর এই সুধী সমাবেশ হবে। ওবায়দুল কাদের জানান, এর আগে ১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বড় ছাত্র সমাবেশ করবে ছাত্রলীগ। মতবিনিময় সভায় আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মো. ফারুক খান, কামরুল ইসলাম ও বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন। সভা পরিচালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির প্রমুখ। এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস