বাংলাদেশ

বাংলাদেশে কোটিপতির সংখ্যা কত?

বাংলাদেশে কোটিপতির সংখ্যা কত তা নিয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া দুষ্কর। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে যেখানে ব্যাংকে কোটি টাকা জমা আছে এমন একাউন্টধারীর মোট সংখ্যা প্রকাশ করা হয়।

সম্প্রতি দৈনিক ইক্তেফাকে এক নিবন্ধে ব্যাংকার ও অর্থনীতি বিশ্লেষক মামুন রশীদ লিখেছেন,  বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের ৪০ শতাংশের বেশি এখন কোটিপতিদের দখলে। ৫০ ভাগ লাখপতি আর ১০ ভাগ আমানত রয়েছে লাখ টাকার নিচের অ্যাকাউন্টগুলোয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের কাছে ৪০ শতাংশের বেশি সম্পদ কেন্দ্রীভূত হওয়ায় দেশে আয় বৈষম্য বেড়েছে। অনেক ধনী বা খুব গরিবের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে বিরাট ফারাক।

মামুন রশীদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যানের তথ্য তুলে ধরে জানান, ২০০৯ সালের মার্চে দেশে ব্যক্তিপর্যায়ে কোটিপতি অ্যাকাউন্ট ছিল ১২,৯১৭টি। বর্তমানে ( ২০১৫ সালের মাঝামাঝি) তা দাঁড়িয়েছে ৪০,৬৮৭টিতে।

সে হিসাবে গেল ৬ বছরে দেশে ব্যক্তিপর্যায়েই কোটিপতি অ্যাকাউন্ট বেড়েছে প্রায় ২৭,৭৭০টি। প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ২১৫ শতাংশ।

অন্যদিকে, ২০০৯ সালের মার্চে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলে ব্যাংকে কোটি টাকার ঊর্ধ্বে অ্যাকাউন্ট ছিল ১৯,৬৩৬টি। ২০১৪ সালের ডিসেম্বর শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪,৭২৭টিতে। সে হিসাবে ৬ বছরে দেশে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায় মিলে কোটিপতি অ্যাকাউন্ট বেড়েছে প্রায় ৩৫ হাজার। প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ১৭৮ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি অ্যাকাউন্টধারী ছিলো মাত্র ৫ জন। ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বর শেষে এ সংখ্যা ৪৭-এ পৌঁছে, যা ১৯৮০ সালের ডিসেম্বরে ছিল ৯৮ জন। তখন তাদের আমানতের পরিমাণ ছিল সামগ্রিক ব্যাংকিং খাতের মোট আমানতের ১০ শতাংশ।

এরপর ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৪৩-এ। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৬ সালের জুনে কোটিপতির মোট সংখ্যা ছিল ২,৫৯৪ এবং ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর শেষে কোটিপতির মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৫,১৬২ তে। এরপর অক্টোবর ২০০১ থেকে ডিসেম্বর ২০০৬ পর্যন্ত কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছিল ৮,৮৮৭ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২ বছরে বেড়েছিল ৫,১১৪।