ভোট বর্জনের কর্মসূচির নামে নির্বাচন বানচাল করতে বাস-ট্রেনসহ যানবাহনে আগুন লাগানো, হামলাসহ নাশকতা ঘটিয়ে সাধারণ মানুষের মনে ভয় সৃষ্টির চেষ্টা করেছে বিএনপি। নাশকতার কাজে বিএনপি দিনমজুর-শ্রমিকদের ব্যবহার করছে বলে জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (গোয়েন্দা) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবিতে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি ভোট বর্জনের কর্মসূচির নামে যা করছে তা দেশবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী। তারা যে লিফলেট বিতরণ করছেন সেখানে বলা হচ্ছে, সরকারকে সব ধরনের ট্যাক্স, ইউটিলিটি বিল দেওয়া বন্ধ করতে। তারা একদিকে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে নাশকতার কাজ করছেন। তাদের এ অপপ্রচার সংবিধানবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী এবং গণতন্ত্রবিরোধী। এ প্রচেষ্টা বন্ধের জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ বদ্ধপরিকর।
গত ২৮ ডিসেম্বরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর নিউ মার্কেট থানার কাটাবন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রাইম প্রিন্টার্স থেকে বিএনপির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল শাখার সভাপতি এবং কৃষক দলের একজন যুগ্ম আহ্বায়কসহ ১১ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা ও লালবাগ বিভাগ। এই সময়ে প্রাইম প্রিন্টার্স থেকে নির্বাচন বিরোধী ও সরকার বিরোধী ৫০ হাজার লিফলেট উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় রাজধানী নিউ মার্কেট থানায় বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলার তদন্তে নেমে এবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডির বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও চারজনকে গ্রেফতার করে ডিবির লালবাগ বিভাগ ও রমনা বিভাগ। এই সময়ে ‘ডিজাইন রুম’ নামের একটি দোকান থেকে প্রিন্ট করা ২ হাজার লিফলেট উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা হয় প্রিন্টিং মেশিন, ফটোকপি মেশিনসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- নাজমুল হুদা ওরফে রাকির (২৬), রাসেল মিয়া (২৭), নাহিদ হোসেন (৩৩) ও বিকাশ কুমার শীল (২৮)।
গোয়েন্দা প্রধান বলেন, নাজমুল হুদা রাকিব ছাত্রদল তেজগাঁও কলেজ শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। রাসেল ও নাহিদ পেশায় নির্মাণ শ্রমিক ও যুবদল কর্মী। আর বিকাশ কুমার শীল ‘ডিজাইন রুম’ প্রিন্টিং দোকানের লোক।
গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে ডিবি প্রধান আরও জানান, গ্রেফতার ছাত্রদল নেতা এবং যুবদল কর্মীরা স্বীকার করেছে টাকা, দলীয় পদ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দুই নির্মাণ শ্রমিকসহ বেশ কয়েকজনকে ভোলা থেকে ঢাকায় আনা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে নির্মাণ শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, যুবদল এবং ছাত্রদলের বেশ কিছু সিনিয়র নেতাদের নেতৃত্বে রাজধানীর ওয়ারী, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় ঝটিকা মিছিল, মশাল মিছিল, ভাঙচুর, আগুন দেওয়া, বিস্ফোরণ ঘটানোসহ নির্বাচন বিরোধী লিফলেট বিতরণের কাজ করানো হয়। এই ঘটনায় জড়িত যুবদল ও ছাত্রদল নেতাদের খোঁজা হচ্ছে। এই প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে কাজ করছে ডিবি পুলিশ।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস