বাংলাদেশ

জয়নাল ৩০ কোটি টাকা ঋণ নেন ১০ এনআইডিতে

শতকোটি টাকা হাতিয়ে বিদেশে বিলাসী জীবন কাটাতে চেয়েছিলেন জয়নাল আবেদীন ওরফে ইদ্রিস। এ জন্য বেছে নেন ঋণ জালিয়াতির পন্থা। সংগ্রহ করেন ১০টি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)। অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে পাস করাতেন ভুয়া পরিচয় ও নথির বিপরীতে ঋণ। টাকা হাতে পেয়ে হয়ে যেতেন লাপাত্তা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ধরা পড়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জালে। চল্লিশোর্ধ্ব বয়সী এই ব্যক্তিকে শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএসের ১৩ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে তিন সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তার অপর তিনজন হলেন নির্বাচন কমিশনের কর্মচারী পল্লব দাস (৩৬), রফিকুল ইসলাম খান (৩৮) ও আলিফ হোসেন (২০)। গতকাল শনিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে তাদের বিষয়ে বিস্তারিত জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ। ডিবিপ্রধান হারুন বলেন, জয়নাল প্রতারণার জন্য একটি কোম্পানি খুলে আরও সাতটি কোম্পানির নামে কাগজপত্র তৈরি করে রেখেছিলেন। পরে সেগুলো দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ঋণ নিতেন। তাঁকে ভুয়া এনআইডি তৈরি করে দিতেন নির্বাচন কমিশনের কর্মচারী পল্লব দাস। এ জন্য এনআইডিপ্রতি দুই থেকে তিন লাখ টাকা নিতেন। জয়নালের ১০টি এনআইডি ছিল। সেগুলো দিয়ে ব্যাংকে ঋণের জন্য আবেদন করতেন। কোনো এনআইডিতে দাড়িসহ ছবি দিতেন, কোনোটিতে দাড়ি ছাড়া কিংবা গোঁফ থাকত। এ পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ৩০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। এর কিছুই তিনি আর ফেরত দেননি। এই অর্থে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাততলা বাড়ি, উত্তরা ও আশকোনায় কয়েকটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। ডিবি জানায়, সম্প্রতি ডিবির রমনা জোনে একটি ব্যাংক থেকে অভিযোগ দেওয়া হয়। তাদের কাছে ভুয়া পরিচয়পত্র ও নকল দলিল দেখিয়ে ঋণ চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু নথিপত্র সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আইনের আশ্রয় নেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। সেই কাগজপত্রের সূত্র ধরে তদন্ত করতে গিয়ে জয়নালের চক্রের তথ্য পাওয়া যায়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।