বাংলাদেশ

নোয়াখালীতে হিজবুত তাওহীদ কর্মীদের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ৩ জন নিহত

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার চাষির হাটবাজার ও পোরকরা গ্রামে হিজবুত তাওহীদের কর্মীদের সঙ্গে গ্রামবাসীর ব্যাপক সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছে।

সোমবার দুপুর ১২টা থেকে থেমে থেমে চলা এই সংঘর্ষে আরো অন্তত অর্ধশত লোক আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ ব্যাপক ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।

সংঘর্ষে নিহতদের মধ্যে দুজন হলো হিজবুত তাওহীদের কর্মী ইব্রাহিম খান রুবেল (২৫), মো. সোলায়মান (২৬)। তাদের গলা কেটে হত্যা করা হয়। এছাড়া পাশের গ্রাম খোড়খাসতার মাটি কাটা শ্রমিক মজিবুল হক মজু (৪০) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।

এ সময় চাষির হাটবাজারে অবস্থিত হিজবুত তাওহীদের কার্যালয় ভাঙচুর ও সংগঠনের এক সমর্থকের এক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ লোকজন। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুজ্জামানের নেতৃত্বে দাঙ্গা পুলিশ রয়েছে। হিজবুত তাওহীদের আরো শতাধিক কর্মী-সমর্থককে ঘেরাও করে রেখেছে গ্রামবাসী। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করলেও গ্রামবাসীর প্রতিরোধের কারণে সম্ভব হচ্ছে না বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে, গত কয়েক বছর থেকে পোরকরা গ্রামে হিজবুত তাওহীদের কর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় মুসল্লিদের নানা বিষয়ে বিরোধ চলে আসছে।

স্থানীয় মুসল্লিদের অভিযোগ, হিজবুত তাওহীদের কর্মীরা এলাকায় ইসলামবিরোধী নানা কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। দুবছর আগে স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে তারা এলাকাছাড়া হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি চাষির হাটে সমাবেশ করে তারা উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়। এতে লোকজন আরো ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। সে থেকে গত কয়েক দিন পর্যন্ত সংগঠনের বহিরাগতদের এলাকায় আনাগোনা বেড়ে যায়। এনিয়ে সোমবার স্থানীয় লোকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দিয়ে আসার সময় চাষির হাটে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংঘর্ষ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত অর্ধশত লোক আহত হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। দুপুরে উত্তেজিত জনতা সংগঠনের এক সমর্থকের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে বলেও জানা যায়।

এ বিষয়ে সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিকারুজ্জামান সোমবার স্থানীয়দের এক অভিযোগ পাওয়া ও সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুজ্জামান, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সোনইমুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী হানিফুল ইসলামসহ র‌্যাব, বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।