বাংলাদেশ

রাবি শিক্ষক হত্যাকাণ্ড : আটক সন্দেহভাজন শিবির নেতার মৃত্যু

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত সন্দেহভাজন শিবির নেতা হাফিজুর রহমান (২১) মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার ভোর রাত সাড়ে ৪টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।

রামেকের উপপরিচালক ডা. গাজী সাইফুল আলম চৌধুরী জানান, হাফিজুর রহমান রক্ত স্বল্পতাজনিত জন্মগত সমস্যায় ভুগছিলেন। এই সমস্যার সূত্র ধরেই তার শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয় ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।

এর আগে কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ায় গত ১৭ মে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। রামেকের ওয়ার্ড মাস্টার মোশাররফ হোসেন জানান, হাফিজুর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন।

মত্যুর পর তার মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপতালের মর্গে রাখা হয়েছে। দুপুরের মধ্যে ময়নাতদন্ত করে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার কথা রয়েছে।

সকালে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার শফিকুল ইসলাম বলেন, শিবির নেতা হাফিজুর রহমান আগে থেকেই রক্ত স্বল্পতাজনিত রোগে আক্রান্ত ছিলেন। কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৭ মে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপতালে পাঠানো হয়। এর পর থেকে তিনি হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বৃহস্পতিবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান রাজশাহী জেল সুপার শফিকুল ইসলাম।

এদিকে জটিল রোগে আক্রান্ত শিবির নেতাকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। একইসঙ্গে এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রশিবির।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেন নেতৃবৃন্দ।

বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত বলেন, রাবি শিক্ষক হত্যার ঘটনায় নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে জটিল রোগে আক্রান্ত (থ্যালাসেমিয়া) রাবির ছাত্র শিবির নেতা হাফিজুর রহমানকে সম্পূর্ণ অমানবিকভাবে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অথচ সে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরাই করতে পারতো না এবং প্রতি তিন মাস পরপর তার রক্ত পরিবর্তন করতে হয়। এ বিষয়টি পরিবার ও সংগঠনের পক্ষ থেকে তুলে ধরে তার মুক্তি দাবি করা হলেও প্রশাসন তাতে কর্ণপাত করেনি। উল্টো রাবি শিক্ষক হত্যার মত স্পর্শকাতর মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কারাগারেও তাকে উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান করা হয়নি। অবশেষে কারান্তরীন হয়ে গতরাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করে। পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে ঘাতকের মত পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকা-ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।