বাংলাদেশ

আবু সাঈদের রক্তই খুলল আমার কারাগার কেল্লা: রংপুরে এটিএম আজহার

রংপুরে দীর্ঘ ১৭ বছর পর আয়োজিত বিভাগীয় জনসভায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, ‘রংপুরের কেউ বলতে পারবে না আমি কোনো অপরাধে জড়িত ছিলাম। আমাকে জোর করে অপরাধী বানানো হয়েছে।’
শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আয়োজিত জামায়াতের বিভাগীয় জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি। জনসভাটি আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী রংপুর মহানগর ও জেলা শাখা।
আজহারুল বলেন, ‘আমি কারাগারে প্রস্তুত ছিলাম ফাঁসির জন্য। আল্লাহ চেয়েছেন বলেই আমি ফাঁসির মঞ্চ থেকে আজ লক্ষ জনতার মঞ্চে দাঁড়িয়ে আছি। যাদের গলায় রশি পড়ার কথা ছিল, তাদের গলায় আজ ফুলের মালা।’ তিনি দাবি করেন, ‘যারা আমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিল, তারাও পরে বলেছেন—তাদের জোর করে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা হয়েছে। আমার কোনো ক্ষোভ নেই। মুক্তি পেয়েছি, সেটাই আল্লাহর ইচ্ছা।’
বক্তব্যে আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মুক্তির পথ দেখিয়েছে আবু সাঈদের রক্ত। সে ছিল গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ। ৫ আগস্ট যদি না হতো, তবে আপনারা আমার জানাজা পড়তেন। আমি তার হত্যার বিচার চাই।’ জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন—‘মাওলানা নিজামী, মুজাহিদ, কাদের মোল্লা, মীর কাশিম—সবাইকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। আবুল কালাম ইউসুফ, গোলাম আযম, সাঈদীসহ আরও অনেককে বিনা চিকিৎসায় হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাগুলোর বিচার হওয়া উচিত।’ আজহারুলের ভাষ্য, ‘এই রায় শুধু আমাকে নয়, জামায়াতে ইসলামীকেও মিথ্যা অপবাদ থেকে মুক্ত করেছে। সর্বোচ্চ আদালত বলেছে—এই আইনই বেআইনি ছিল। যারা বলত আমরা মানবতাবিরোধী অপরাধী, আজকের রায়ে সেই অপবাদও খণ্ডন হয়েছে।’ সাবেক যুদ্ধাপরাধের আসামি আজহারুল দাবি করেন, ‘৫ আগস্ট আমরা জেলে ছিলাম। তখন ভাবিনি শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবে। রাখে আল্লাহ মারে কে? এই বিপ্লব আল্লাহ নিজেই ঘটিয়েছেন।’ জনসভা থেকে রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। বিকেল ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলেও জুমার নামাজের পর থেকেই নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে রংপুর জিলা স্কুল মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। ভিড় গড়িয়ে পড়ে সড়কে।