বাংলাদেশ

ব্যর্থতার দায়ে সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত : খালেদা

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘এই সরকার প্রথম থেকেই ব্যর্থ।কাজেই সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তাদের ব্যর্থতার দায় নিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘বর্তমানে দেশের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। দেশের মানুষ মোটেই ভালো নেই।আতঙ্ক ও ভয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। দেশে সুশাসন, গণতন্ত্র, আইনের শাসন, বাকস্বাধীনতার অধিকার না থাকায় নানান ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে। যে সমস্ত ঘটনা ঘটছে সরকার শক্তভাবে মোকাবেলা না করতে পারলে এই ধরনের ঘটনা থেকে সত্যিকার অর্থে বেরিয়ে আসা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এমনকি সরকারের সেই ধরনের কোনো প্রস্তুতি আছে কিনা তাও দেখার বিষয়।’

সম্প্রতি গুলশানের ক্যাফেতে ঘটে যাওয়া প্রসঙ্গে ইঙ্গিত করে বিএনপি প্রধান বলেন, ‘সরকারের ব্যর্থতা, অযোগ্যতা ও গাফিলতির জন্যই দেশে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। কারণ সরকার কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের ধরতে পারেন না। যাদের ধরা হয় তারা আবার তাদেরই লোক, তাই কয়েকদিন পর অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, বিডিআরের ঘটনা থেকেই এধরনের অপরাধের সূত্রপাত শুরু হয়েছে। তখনই যদি সরকার প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা না দিয়ে শক্ত হাতে দমন করতো তাহলে আজকে বাংলাদেশে এমন অবস্থার সৃষ্টি হতো না।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি গুলশানের একটি ক্যাফে রেস্তোরাঁয় যে নাশকতা হয়েছে সেই এলাকাটি কূটনৈতিক জোন হিসেবে পরিচিত। সেখানে অনেক ধরনের নিরাপত্তাবেষ্টনী থাকে। তাই সাধারণ মানুষ না জানলেও সরকার তো জানতো। তাহলে এতো সময়ক্ষেপণ করা হলো কেন? কেন ভোর পর্যান্ত অপেক্ষা করতে হলো।’

তিনি বলেন, পুলিশবাহিনী গ্রেফতার বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত। তারা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। গুলশানের ঘটনায় পুলিশ, র‌্যাব ছিলো তারা পারেননি কেন? পরবর্তীতে সেনাবাহিনীকে এগিয়ে আসতে হলো। তাহলে এতো দেরি করা হলো কেন?

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি আবারো বলছি এখন প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য।কিন্তু সরকার জাতীয় ঐক্যের পরিবর্তে ব্লেমগেইম করে চলেছে। প্রকৃত অপরাধীদের ধরা হচ্ছে না। আজকে একদিকে সন্ত্রাস অন্যদিকে লুটপাট চলছে। তাই প্রকৃত অপরাধীদের শক্তহাতে দমন না করা হলে বর্বরোচিত ঘটনার অবসান কঠিন হয়ে যাবে।’

শুভেচ্ছা বিনিময়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আসম হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আতলাফ হোসেন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হারুন অর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শ্যামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নিরব, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, সিনিয়র সহ-সভাপতি আজমল হোসেন পাইলট প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া পেশাজীবীদের মধ্যে প্রফেসর এমাজ উদ্দিন আহমেদ, প্রফেসর আফম ইউসুফ হায়দার, প্রফেসর সুকোমল বড়ুয়া, কবি আব্দুল হাই শিকদার, রুহুল আমিন গাজী, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, এম আব্দুল্লাহ প্রমুখ।

ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ইতালি, চীনের রাষ্ট্রদূত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিসহ ২৬টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিরা এই ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ে অংশ নেন।


এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি