বাংলাদেশ

পুলিশের কাছে অসংগতিপূর্ণ বক্তব্য মামুনুর রশীদের

রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়া কে এম মামুনুর রশীদকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) পূর্বাচলের ১ নম্বর সেক্টরের একটি মসজিদ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকালে তিনি অসুস্থ বোধ করায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মামুনুর রশীদের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় করা তদন্তে তার দেওয়া বক্তব্যে একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম (অতিরিক্ত ডিআইজি)।
ডিসি মহিদুল বলেন, “তার শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি, মারধরেরও প্রমাণ নেই। শুধু মোবাইলের পাসওয়ার্ড জানতে চেয়ে দুটি চড় মারা হয়েছিল বলে তিনি নিজেই জানিয়েছেন। আবার নিয়মিত খাওয়াদাওয়াও করানো হয়েছে।” তিনি আরও জানান, মামুন নিজে একটি অটোরিকশায় উঠেছিলেন, যেখানে আরও তিনজন ছিলেন। ওই তিনজন তাকে বাজারে যাওয়ার কথা বলে সঙ্গে নেয়। পরে একটি মাইক্রোবাসে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে বেঁধে রাখা হয়, তবে খাবার দেওয়া হয় এবং আজ সকালে নাশতাও করানো হয়েছে।
ডিসির ভাষ্যে, “তিনি বলেছেন, তাকে অপহরণ করা হয়েছিল, কিন্তু ওই বাজার এলাকায় তো বহু লোক থাকে, সেখানে চিৎকার বা হইচই করেননি কেন—জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তর দিতে পারেননি। তার কথা আমাদের কাছে বিচ্ছিন্ন ও অসংগতিপূর্ণ মনে হয়েছে।” মামলার তদন্তে পাওয়া গেছে কয়েকটি সন্দেহভাজন ফেসবুক পেজ ও মোবাইল নম্বর। তার এক ফেসবুক পেজ থেকে সম্প্রতি একটি পোস্ট দেওয়া হয়, যা পরবর্তীতে ডিলিট করা হয়। ওই পেজটি আবার তার স্ত্রীর মোবাইলেও লগইন ছিল বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তারা। এছাড়া তদন্তে দেখা গেছে, নিখোঁজ হওয়ার দিন মামুন লুঙ্গি নয়, প্যান্ট ও পাঞ্জাবি পরে বাসা থেকে বের হন, যা ছিল অস্বাভাবিক। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায় ওই সময় থেকেই। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে পুলিশ বলছে, ঘটনার পেছনে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে। নিখোঁজ হওয়ার দিনই তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার তুরাগ থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন। মামুনুর রশীদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তুরাগ থানার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সাম্প্রতিক সময়ে ন্যাশনাল কনসার্ন পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক প্রার্থী ছিলেন। তার বাবা মো. সফি সাংবাদিকদের বলেন, “আমার ছেলে এখনও অসুস্থ। সে সুস্থ হলে বিস্তারিত বলতে পারবে। আমি নিজে কিছু জিজ্ঞেস করিনি।” ডিসি মহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, “মামুন একসময় জুলাই যোদ্ধা ছিলেন, তাই বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়েছি। তদন্ত চলছে, তার বক্তব্য যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”     এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস