দুর্নীতির সঙ্গে জঙ্গির সম্পৃক্ততা রয়েছে। সাধারণত উচ্চ পর্যায়ের ক্ষমতাশীল মানুষেরা দুর্নীতি করে, আর ক্ষতিগ্রস্ত হয় গরীব মানুষ। তাই গরীব মানুষ জঙ্গির মত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ‘কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা ২০১৬-২০২১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সুশীল সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তাদের বক্তব্যে এসব কথা উঠে আসে।
সভায় সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, তালেবানের উত্থানের কারণ কারচুপির নির্বাচন, দুর্নীতি ও বিচারহীনতা। তাই আমি মনে করি দুর্নীতির সঙ্গে অবশ্যই জঙ্গির সম্পৃক্ততা আছে। উচ্চ পর্যায়ের মানুষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি করে, আর ক্ষতিগ্রস্ত হয় গরীব মানুষরা। আর ওই ক্ষতিগ্রস্ত ও গরীব মানুষরাই জঙ্গির মত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ রাঘব বোয়ালরা যাতে আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে সে জন্য যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনালের মত দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনাল করা দরকার। এ ছাড়া শর্ষের ভিতর থেকে ভূত তাড়াতে দুদককে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় দুদকের প্রাক্তন চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, দুদকের মূলভিত্তি হলো স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা। অনুসন্ধান ও তদন্ত কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদেরও কোনো রাগ বা ক্ষোভ থাকা চলবে না। বর্তমান আইন কাঠামো দ্বারা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করা সম্ভব না। এজন্য প্রথমে দুদকে সরকারি সচিবের মর্যাদায় সচিব ও নিজস্ব সচিবলায় থাকতে হবে। একই সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দুদকের সংযোগ করতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে রাজনীতি করা এক ধরনের বিনিয়োগ। সুতরাং ওই রাজনীতিবিদের কাছ থেকে ভাল কিছু আশা করা যায় না। জনগণ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার। দুর্নীতি নির্মূল করতে হলে সবার আগে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। তবে দুদক যদি স্বাধীন নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে তাহলে দুর্নীতি কিছুটা কমবে। যা সহনীয় পর্যায়ে নেওয়া সম্ভব।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন একাকার হয়ে গেছে। বর্তমানে এই দুইয়ের মাধ্যমে রাতারাতি ধনী হচ্ছে মানুষ। এদের কাছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সরকার বড় অসহায়। এখান থেকে মুক্তি পাওয়া খুবই কঠিন।
দুদককে শক্তিশালী করতে পৃথক ক্যাডার থাকার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুদক যে অবস্থায় আছে সে অবস্থা থেকে শক্তিশালী হওয়া দরকার। শুধু ডেপুটেশন বা প্রেষণে আসা কর্মকর্তাদের দিয়ে কাজ করালে ধারাবাহিকভাবে ভাল কাজ করা সম্ভব নয়। এজন্য দুদকের জন্য পৃথক ক্যাডার বাহিনী দরকার। যাদের দীর্ঘমেয়াদে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ ও সুবিধা দিতে হবে। তাদের পদমর্যাদা হতে হবে অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের পদমর্যাদার তুলনায় ভিন্ন ধরনের। তাহলে দুদক ভারতের সিবিআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব।
প্রাক্তন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, আপনাদের যে ২২টি শাখা আছে, শাখা আর বৃদ্ধি না করে এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকুন। তবে প্রয়োজনে জনবল বাড়াতে পারেন। এসব জনবল দিয়ে ছোট ছোট ঘুষ দুর্নীতির মামলা না ধরে বড় বড় দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমগুলো বেশি করুন।
সমাজবিজ্ঞানী মিজানুর রহমান শেলী বলেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলের মতই সরকার ও সমাজকে সোচ্চার হয়ে দুর্নীতি নির্মূল করতে হবে। কেননা দুর্নীতি থেকেই জঙ্গিবাদের উত্থান হয় বেশি। দুর্নীতি যদি আমরা না হঠাতে পারি, তাহলে তা দেশকে ধ্বংস করে দিবে।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) এ এফ এম আমিনুল ইসলাম। এ ছাড়া সভায় দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ ও দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল উপস্থিত ছিলেন।
দুদক কমিশনার ড. নাসির উদ্দিন আহমেদের পরিচালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী প্রমুখ।
এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি
মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ‘কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা ২০১৬-২০২১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সুশীল সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তাদের বক্তব্যে এসব কথা উঠে আসে।
সভায় সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, তালেবানের উত্থানের কারণ কারচুপির নির্বাচন, দুর্নীতি ও বিচারহীনতা। তাই আমি মনে করি দুর্নীতির সঙ্গে অবশ্যই জঙ্গির সম্পৃক্ততা আছে। উচ্চ পর্যায়ের মানুষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি করে, আর ক্ষতিগ্রস্ত হয় গরীব মানুষরা। আর ওই ক্ষতিগ্রস্ত ও গরীব মানুষরাই জঙ্গির মত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ রাঘব বোয়ালরা যাতে আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে সে জন্য যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনালের মত দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনাল করা দরকার। এ ছাড়া শর্ষের ভিতর থেকে ভূত তাড়াতে দুদককে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় দুদকের প্রাক্তন চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, দুদকের মূলভিত্তি হলো স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা। অনুসন্ধান ও তদন্ত কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদেরও কোনো রাগ বা ক্ষোভ থাকা চলবে না। বর্তমান আইন কাঠামো দ্বারা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করা সম্ভব না। এজন্য প্রথমে দুদকে সরকারি সচিবের মর্যাদায় সচিব ও নিজস্ব সচিবলায় থাকতে হবে। একই সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দুদকের সংযোগ করতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে রাজনীতি করা এক ধরনের বিনিয়োগ। সুতরাং ওই রাজনীতিবিদের কাছ থেকে ভাল কিছু আশা করা যায় না। জনগণ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার। দুর্নীতি নির্মূল করতে হলে সবার আগে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। তবে দুদক যদি স্বাধীন নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে তাহলে দুর্নীতি কিছুটা কমবে। যা সহনীয় পর্যায়ে নেওয়া সম্ভব।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন একাকার হয়ে গেছে। বর্তমানে এই দুইয়ের মাধ্যমে রাতারাতি ধনী হচ্ছে মানুষ। এদের কাছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সরকার বড় অসহায়। এখান থেকে মুক্তি পাওয়া খুবই কঠিন।
দুদককে শক্তিশালী করতে পৃথক ক্যাডার থাকার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুদক যে অবস্থায় আছে সে অবস্থা থেকে শক্তিশালী হওয়া দরকার। শুধু ডেপুটেশন বা প্রেষণে আসা কর্মকর্তাদের দিয়ে কাজ করালে ধারাবাহিকভাবে ভাল কাজ করা সম্ভব নয়। এজন্য দুদকের জন্য পৃথক ক্যাডার বাহিনী দরকার। যাদের দীর্ঘমেয়াদে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ ও সুবিধা দিতে হবে। তাদের পদমর্যাদা হতে হবে অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের পদমর্যাদার তুলনায় ভিন্ন ধরনের। তাহলে দুদক ভারতের সিবিআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব।
প্রাক্তন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, আপনাদের যে ২২টি শাখা আছে, শাখা আর বৃদ্ধি না করে এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকুন। তবে প্রয়োজনে জনবল বাড়াতে পারেন। এসব জনবল দিয়ে ছোট ছোট ঘুষ দুর্নীতির মামলা না ধরে বড় বড় দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমগুলো বেশি করুন।
সমাজবিজ্ঞানী মিজানুর রহমান শেলী বলেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলের মতই সরকার ও সমাজকে সোচ্চার হয়ে দুর্নীতি নির্মূল করতে হবে। কেননা দুর্নীতি থেকেই জঙ্গিবাদের উত্থান হয় বেশি। দুর্নীতি যদি আমরা না হঠাতে পারি, তাহলে তা দেশকে ধ্বংস করে দিবে।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) এ এফ এম আমিনুল ইসলাম। এ ছাড়া সভায় দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ ও দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল উপস্থিত ছিলেন।
দুদক কমিশনার ড. নাসির উদ্দিন আহমেদের পরিচালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী প্রমুখ।
এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি