বাংলাদেশ

সাগরে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ‘স্বাদের’ ইলিশ

কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ। কাঙ্খিত রুপালী ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটেছে জেলে, আড়ৎদার ও মৎস্যজীবিদের মাঝে। জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ায় উপকূলীয় জেলে পল্লী ও আড়ৎগুলোতে আনন্দের জোয়ার বইছে।

গত দু’দিন ধরে গভীর সমুদ্র থেকে ইলিশ বোঝাই ট্রলারগুলো আলীপুর-মহিপুর মৎস্যবন্দরের আড়তগুলোতে ফিরে আসতে শুরু করেছে। স্থানীয় মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ীরা ইলিশ সংগ্রহ করে পিকআপ ও ট্রাক বোঝাই করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।

মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিটি ট্রলার ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকার ইলিশ বিক্রি করেছে। বর্তমানে স্থানীয় আড়ৎগুলোতে গ্রেড অনুযায়ী প্রতিমন ইলিশ ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে গভীর সমুদ্রে জেলেদের সাইনজালসহ অগভীর পানিতে খুটা জালেও পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়ছে। চট্টগ্রামের এফ বি টিপু-২ নামের একটি ট্রলার একশ পাঁচ মন ইলিশ মাছ বিক্রি করেছে। এছাড়া একই মালিকের এফ বি টিপু-৩ একশ ৫৮ মন ইলিশ মাছ নিয়ে তীরে আসে। তারা মহিপুর মৎস্য আড়তে প্রতিমন ২২ হাজার টাকা দরে বিক্রি করেছে।

গভীর সমুদ্র থেকে তীরে ফিরে আসা প্রতিটি ট্রলার বেশ পরিমান মাছ নিয়ে এসেছে। অগভীর সমুদ্রেও খুটা জালে বড় সাইজের বেশ ইলিশ ধরা পরছে। মৎস্য অধিদপ্তরের কার্যকরী পদক্ষেপ ও পরিকল্পণায় ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কুয়াকাটা, আলীপুর ও মহিপুরের আড়ৎগুলোতে এখন উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের একদন্ড বিশ্রাম নেই। দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর জন্য সারিসারি পিকআপ ও ট্রাক অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া দূরপাল্লার পরিবহনের ছাদেও ককসিট বোঝাই করে ইলিশ বহন করতে দেখা গেছে।

কুয়াকাটার ঝুমা ফিসের মালিক সোবাহান মৃধা বলেন, কিছু দিন ধরে খুটা জালে বেশ মাছ পড়ছে। আবহাওয়া খারাপ থাকায় ফিরে আসা ট্রলারগুলো সাগরে যেতে পাড়ছেনা। মহিপুরের শাহজালাল ফিসের মালিক নাহিদ আকন বলেন, দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর জেলেদের জালে কাঙ্খিত ইলিশ ধরা পড়ছে। তার আড়তে শুক্রবার সকালে প্রচুর মাছ বেচা-কেনা হয়েছে। এভাবে মাছ ধরা পড়লে জেলেরা লাভের মুখ দেখবে বলে তিনি জানান।

মহিপুর মৎস্য আড়তদার সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিমাই চন্দ্র দাস জানান, সন্তোষজনক মাছ ধরা পড়ছে। এভাবে মাছ ধরা পড়লে দায় দেনা মুক্ত হবে মৎস্যজীবিরা। তবে ইলিশের দাম কিছুটা কমে গেলেও জেলেরা খুশি। গভীর সাগর থেকে প্রতিটি ট্রলার কম বেশি মাছ নিয়ে ঘাটে আসছে। এ কারণে মৎস্যবন্দর প্রান ফিরে পেয়েছে।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম জানান, গভীর ও অগভীর সমুদ্রে বেশ ইলিশ ধরা পড়ছে। মৎস্য অধিদপ্তরের কার্যকরী পদক্ষেপ ও পরিকল্পণায় (প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষা, জাটকা সংরক্ষন, জেলেদের ভিজি এফ/পূর্ণবাসন) বিশেষ করে নৌবাহিনী, কোস্টকার্ড, পুলিশ, প্রশাসন ও জনগনের সহযোগীতায় দেশে ব্যাপকহারে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।