জনগণের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এর বাইরে অন্য কোনো উদ্যোগ নিলে দেশের জনগণ তা মেনে নেবে না বলেও সরকারকে হুঁশিয়ার করেছেন তিনি।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে জোটবাদ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)।
মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে সম্প্রতি রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অবিলম্বে একটি নির্বাচন আমরা চেয়েছি। আমরা কখনো বলিনি মধ্যবর্তী নির্বাচন। কারণ, ওই নির্বাচনই তো মানি না। সুতরাং নতুন নির্বাচন দিতে হবে। সেই নির্বাচন হতে হবে অবশ্যই নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। দেখেছি, আপনাদের (আওয়ামী লীগ) অধীনে যে নির্বাচন হয়, তা ছলে বলে কৌশলে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সেই ফলাফল আপনারা নিজেদের অধীনে নিয়ে নেন।’
নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে সার্চ কমিটি গঠনে জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটানোর আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন পরিচালনা করবে সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন। সেই নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে আপনাদের নির্বাচিত সার্চ কমিটি নয়, জনগণের নির্বাচিত সার্চ কমিটি দ্বারা। জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। অন্যথায় যে উদ্যোগই গ্রহণ করেন না কেন, জনগণ সমর্থন করবে না।’
তিনি বলেন, ‘আজকে নির্বাচনের কথা উঠেছে। এর দুটি কারণ থাকতে পারে। মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য হতে পারে। মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা উঠে এসেছে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সাহেবের কাছ থেকে। আবার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কীসের মধ্যবর্তী নির্বাচন? আমরা মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা বলি নাই। আমরা বলেছি, গত নির্বাচনটিই আমরা মানি না এবং সেটা অনৈতিক। আপনি যে ক্ষমতায় বসে আছেন, সরকার গঠন করেছেন, সেটি অনৈতিক। শতকরা ৫ জন ভোটারও ভোট দিতে যায়নি। ১৫৪ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তারা নিজেদের প্রয়োজনে গণতন্ত্রকে ব্যবহার করে, এ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করলেও তাদের হাতেই বারবার গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেড়েক মেরে দিয়েছে তারা। দেশে এখন যত সংকট, এর সবকিছুর মূলে রয়েছে গণতন্ত্র। গণতন্ত্র না থাকার কারণেই সবকিছু ঘটছে।
এ সময় জঙ্গিবাদের উত্থানের জন্য ক্ষমতাসীনদের দায়ী করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘জঙ্গিবাদের ভয়াবহ দানব বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। কারা নিয়ে এলো? কারা প্রশ্রয় দিলো? কারা মালির মতো যত্ন নিয়ে এটাকে বাড়তে দিলো? আওয়ামী লীগের প্রশ্রয় পেয়েই জঙ্গিবাদ এভাবে বেড়ে উঠেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে বিএনপিকে দোষারোপ করা হয়। জঙ্গিবাদের পেছনে নাকি বিএনপি জড়িত। অথচ পত্রিকায় আসছে, যেসব জঙ্গি ধরা পড়ছে, তাদের অনেকেই আওয়ামী লীগ নেতার সন্তান। যেসব জঙ্গি ধরা পড়ছে, তারা আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িতে ধরা পড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘যেসব জঙ্গি ধরা পড়ছে, তাদের নিয়ে তদন্ত না করে, আদালতে হাজির না করে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলা হচ্ছে কেন? মুলত আওয়ামী লীগ নিজেদের স্বার্থে ক্ষমতায় থাকতে জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করছে।’
এক-এগারের সরকার বাংলাদেশে বিরাজনীতিকরণ করতে চেয়েছে, উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ এক-এগারোর মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন করছে। অর্থাৎ দেশকে বিরাজনীতিকরণ করছে তারা।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন যে, আওয়াম লীগ দেশ চালাচ্ছেন, সরকার পরিচালনা করেছন? আমার মনে হয়, অন্তর থেকে বলবেন, তারা দেশ চালাচ্ছেন না। অন্য কেউ, অন্য কোনোভাবে এ দেশ পরিচালনা করছে।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দমন-নিপীড়ন করে বিএনপিকে নিঃশেষ করে একদলীয় ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে, অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ কারাগারের মধ্যে আছে। অথচ এটি তাদের প্রাপ্য ছিল না। কারণ, তারা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে।
এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, ‘এখন মানুষের কথা বলার অধিকার নেই, সংগঠন করার অধিকার নেই। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, সাংবাদিকদের ভয় দেখানো হচ্ছে।
আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে সভাপতির বক্তব্যে শফিউল আলম প্রধান ভোটাধিকার ফিরে পেতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় তিনি বলেণ, ‘গণতন্ত্র ছাড়া বাংলাদেশ বাঁচবে না, গণতন্ত্র ছাড়া স্বাধীনতা থাকবে না ‘
সভায় অন্যদের মধ্যে জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, সহসভাপতি মহিউদ্দিন বাবুল প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি
এর বাইরে অন্য কোনো উদ্যোগ নিলে দেশের জনগণ তা মেনে নেবে না বলেও সরকারকে হুঁশিয়ার করেছেন তিনি।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে জোটবাদ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)।
মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে সম্প্রতি রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অবিলম্বে একটি নির্বাচন আমরা চেয়েছি। আমরা কখনো বলিনি মধ্যবর্তী নির্বাচন। কারণ, ওই নির্বাচনই তো মানি না। সুতরাং নতুন নির্বাচন দিতে হবে। সেই নির্বাচন হতে হবে অবশ্যই নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। দেখেছি, আপনাদের (আওয়ামী লীগ) অধীনে যে নির্বাচন হয়, তা ছলে বলে কৌশলে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সেই ফলাফল আপনারা নিজেদের অধীনে নিয়ে নেন।’
নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে সার্চ কমিটি গঠনে জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটানোর আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন পরিচালনা করবে সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন। সেই নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে আপনাদের নির্বাচিত সার্চ কমিটি নয়, জনগণের নির্বাচিত সার্চ কমিটি দ্বারা। জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। অন্যথায় যে উদ্যোগই গ্রহণ করেন না কেন, জনগণ সমর্থন করবে না।’
তিনি বলেন, ‘আজকে নির্বাচনের কথা উঠেছে। এর দুটি কারণ থাকতে পারে। মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য হতে পারে। মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা উঠে এসেছে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সাহেবের কাছ থেকে। আবার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কীসের মধ্যবর্তী নির্বাচন? আমরা মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা বলি নাই। আমরা বলেছি, গত নির্বাচনটিই আমরা মানি না এবং সেটা অনৈতিক। আপনি যে ক্ষমতায় বসে আছেন, সরকার গঠন করেছেন, সেটি অনৈতিক। শতকরা ৫ জন ভোটারও ভোট দিতে যায়নি। ১৫৪ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তারা নিজেদের প্রয়োজনে গণতন্ত্রকে ব্যবহার করে, এ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করলেও তাদের হাতেই বারবার গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেড়েক মেরে দিয়েছে তারা। দেশে এখন যত সংকট, এর সবকিছুর মূলে রয়েছে গণতন্ত্র। গণতন্ত্র না থাকার কারণেই সবকিছু ঘটছে।
এ সময় জঙ্গিবাদের উত্থানের জন্য ক্ষমতাসীনদের দায়ী করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘জঙ্গিবাদের ভয়াবহ দানব বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। কারা নিয়ে এলো? কারা প্রশ্রয় দিলো? কারা মালির মতো যত্ন নিয়ে এটাকে বাড়তে দিলো? আওয়ামী লীগের প্রশ্রয় পেয়েই জঙ্গিবাদ এভাবে বেড়ে উঠেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে বিএনপিকে দোষারোপ করা হয়। জঙ্গিবাদের পেছনে নাকি বিএনপি জড়িত। অথচ পত্রিকায় আসছে, যেসব জঙ্গি ধরা পড়ছে, তাদের অনেকেই আওয়ামী লীগ নেতার সন্তান। যেসব জঙ্গি ধরা পড়ছে, তারা আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িতে ধরা পড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘যেসব জঙ্গি ধরা পড়ছে, তাদের নিয়ে তদন্ত না করে, আদালতে হাজির না করে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলা হচ্ছে কেন? মুলত আওয়ামী লীগ নিজেদের স্বার্থে ক্ষমতায় থাকতে জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করছে।’
এক-এগারের সরকার বাংলাদেশে বিরাজনীতিকরণ করতে চেয়েছে, উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ এক-এগারোর মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন করছে। অর্থাৎ দেশকে বিরাজনীতিকরণ করছে তারা।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন যে, আওয়াম লীগ দেশ চালাচ্ছেন, সরকার পরিচালনা করেছন? আমার মনে হয়, অন্তর থেকে বলবেন, তারা দেশ চালাচ্ছেন না। অন্য কেউ, অন্য কোনোভাবে এ দেশ পরিচালনা করছে।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দমন-নিপীড়ন করে বিএনপিকে নিঃশেষ করে একদলীয় ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে, অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ কারাগারের মধ্যে আছে। অথচ এটি তাদের প্রাপ্য ছিল না। কারণ, তারা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে।
এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, ‘এখন মানুষের কথা বলার অধিকার নেই, সংগঠন করার অধিকার নেই। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, সাংবাদিকদের ভয় দেখানো হচ্ছে।
আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে সভাপতির বক্তব্যে শফিউল আলম প্রধান ভোটাধিকার ফিরে পেতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় তিনি বলেণ, ‘গণতন্ত্র ছাড়া বাংলাদেশ বাঁচবে না, গণতন্ত্র ছাড়া স্বাধীনতা থাকবে না ‘
সভায় অন্যদের মধ্যে জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, সহসভাপতি মহিউদ্দিন বাবুল প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি