বাংলাদেশ

১/১১ সরকারের নেওয়া ১২শ’ কোটি টাকা ফেরত পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা

ওয়ান-ইলেভেনের পর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে আদায় করা কয়েক শ’ কোটি টাকা ফেরত পাবেন ব্যবসায়ীরা। অর্থ ফেরত দিতে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের করা আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকালে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।

এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি আপিল আবেদনের শুনানি শেষে বুধবার (১৫ মার্চ) আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার রায়ের এই তারিখ নির্ধারণ করেন।

আদালতে ব্যবসায়ীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আহসানুল করিম। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম।

বিভিন্ন সূত্র মতে, ওই সময়ে ৪০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে ১২শ’ কোটি টাকার বেশি নেওয়ার খবর প্রকাশ হলেও হাইকোর্টে কেবল ১১টি রিট করা হয়েছে। যারাই রিট করেছেন এখন কেবল তারাই এ সুবিধা পাবেন। ১১ রিটের বিপরীতে মোট অর্থ হলো ৬১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

অবশ্য ব্যবসায়ীদের পক্ষের আইনজীবী আহসানুল করীম জানান, এটি একটি জেনারেল অর্ডার। তাই যারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তারা তাদের অর্থ ফেরত পাবেন। তবে যারা মামলার পক্ষ নন তাদের টাকা ফেরত পেতে হলে আদালতে আবেদন করতে হবে। এখন কিভাবে এবং কতদিনের মধ্যে তারা এ অর্থ ফেরত পাবেন আদালতের বিস্তারিত রায়ে সে বিষয়ে নির্দেশনা পাওয়া যাবে।

অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম বলেন, এতোগুলো টাকা সরকার কোথা থেকে ফেরত দেবে তা চিন্তার বিষয়। এখন সরকার যদি সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে রিভিউ হবে।

ড. ইয়াজউদ্দীন আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সরিয়ে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। সেই সময় জরুরি অবস্থা জারি করে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় দেশের অনেক শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের।

২০০৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০০৮ সালের নভেম্বরের মধ্যে প্রায় ৪০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১২০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ আদায় করা হয়। ২০১০ সালে জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, ১/১১ সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল প্রায় ১ হাজার ২৩২ কোটি টাকা। ওই অর্থ বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছেই জমা রয়েছে।

এসব মামলায় ব্যবসায়ীদের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছিল হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক আবেদন করলে বিষয়টি আপিলে আসে।

কে কত টাকা ফেরত পাবে- দ্য কনসোলিডেটেড টি অ্যান্ড ল্যান্ডস কোম্পানি এবং বারাউরা টি কোম্পানি ২৩৭ কোটি ৬৫ লাখ ৪০ হাজার, ইস্ট ওয়েস্ট প্রোপার্টি ১৮৯ কোটি,এস আলম স্টিল মিলস ৬০ কোটি, মেঘনা সিমেন্ট মিল ৫২ কোটি, ইস্টার্ন হাউজিং ৩৫ কোটি, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস ১৭ কোটি ৫৫ লাখ, বসুন্ধরা পেপার মিল ১৫ কোটি,বোরাক রিয়েল এস্টেট ৭ কোটি ১০ লাখ, ইউনিক ইস্টার্ন ৯০ লাখ, ইউনিক ভকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারের স্বত্বাধিকারী মো. নূর আলী ৬৫ লাখ এবং ইউনিক সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ ৬০ লাখ টাকা।


এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি