বাংলাদেশ

দেশে যানজটে বছরে ক্ষতি ৩৭ হাজার কোটি টাকা

ঢাকায় প্রতিবছর যানজটের কারণে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। আর এ ক্ষতির পরিমাণ জাতীয় বাজেটের ১১ ভাগের এক ভাগ।

সাম্প্রতি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরই) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

১৯ মে, শনিবার বুয়েটের এক গোলটেবিল বৈঠকে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোয়াজ্জেম হোসেন এ তথ্য তুলে ধরেন। বৈঠকের আয়োজন করে দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট ও রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।

প্রতিবেদনে যানজটের কারণে সময় নষ্ট এবং আর্থিক ক্ষতির হিসাব তুলে ধরা হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, যদি যানজট ৬০ শতাংশ কমানো যায় তাহলে বছরে ২২ হাজার ২০০ কোটি টাকা বাঁচানো যাবে। আর কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে এ যানজট ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ কমানো সম্ভব। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকা শহরের মোট দুর্ঘটনার ৭৪ শতাংশ ঘটে পথচারী পারাপারের সময়।

ড. মোয়াজ্জেম হোসেন ঢাকার গণপরিবহনগুলো প্রতিদিন ৩৬ লাখ ট্রিপে ৩৫ শতাংশ যাত্রীকে কর্মক্ষেত্রে নিয়ে যায় উল্লেখ করে বলেন, ‘যানজটের কারণে পিক আওয়ারে গণপরিবহনগুলোর গতিবেগ ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটারে নেমে এসেছে। যেখানে হেঁটে চলার গড় গতিও পাঁচ কিলোমিটার। ফলে প্রতিদিন ৫০ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। যানজটে প্রতি বছর ৩৭ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে। নগরের যানজট যদি ৬০ শতাংশ কমানো যায়, তবে ২২ হাজার কোটি টাকা বাঁচানো যাবে।’

যানজটের কারণে মানব চরিত্রের নয়টি দিক নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে অধ্যাপক মোয়াজ্জেম বলেন, ‘মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নাগরিকদের সামাজিক যোগাযোগে প্রভাব পড়ছে। গণপরিবহনে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের নানাভাবে নিগৃহীত হওয়ার বিষয়টিও প্রতিবেদনে উঠে আসে।’

নগরের যানবাহন পরিচালনায় শৃঙ্খলা আনতে বেসরকারি বাস কোম্পানিগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘এখন ঢাকায় ১৫০ থেকে ২০০ বাস সার্ভিস চলছে। এটাকে প্রতিটি রুটে একটি করে কোম্পানিকে দায়িত্ব দিলে ভালো হয়। এতে করে সড়কে প্রতিযোগিতা কমবে।’

সভায় উপস্থিত ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি নগরে অপরিকল্পিত ফ্লাইওভার নির্মাণের সমালোচনা করেন। ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদে রাজনীতিবিদদের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের সভাপতি এআই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ।

এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি