বাংলাদেশ

রাজধানীতে এমপি পুত্রের গাড়ি চাপায় প্রাণ গেল পথচারীর!

রাজধানীর বনানী ফ্লাইওভারে উঠতে থাকা গাড়িচালক সেলিম ব্যাপারীকে দ্রুতগতিতে প্রাইভেটকার দিয়ে ধাক্কা দেয় নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে সাবাব চৌধুরী।

বনানীতে এমপিপুত্রের গাড়ি চাপায় সেলিম ব্যাপারী নিহতের ঘটনায় তিনজন প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা রেকর্ড করেছে কাফরুল থানা পুলিশ। তিনজন প্রত্যক্ষদর্শী বুধবার (২০ জুন) কাফরুল থানায় গিয়ে ঘটনার বর্ণনা দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে নিহত সেলিম ব্যাপারীর জামাই আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরাম করিম চৌধুরীর ছেলে সাবাব চৌধুরী গাড়ি চালাচ্ছিলেন। মঙ্গলবার রাতে তার শ্বশুর প্রাইভেটকার চালক সেলিম ব্যাপারী ডিউটি শেষ করে বনানী সেতু ভবন সংলগ্ন ফ্লাইওভার পার হচ্ছিলেন। এ সময় সেলিম ব্যাপারীর দুই পায়ের ওপর গাড়ি তুলে দেন সাবাব চৌধুরী। এ সময় চাপা খেয়ে গাড়ির বাম্পার চেপে ধরেন সেলিম ব্যাপারী। তখন গাড়ি ব্যাক গিয়ারে দিয়ে আবারও সেলিমকে চাপা দেওয়া হয়। সাবাব চৌধুরী গাড়ি ব্যাক গিয়ারে নিলে সেলিম ব্যাপারী ফ্লাইওভারের গার্ডারে ধাক্কা খান। সেখানে তার মগজ বের হয়ে যায়। এরপর গাড়িটি টান দিয়ে পালিয়ে যান এমপিপুত্র সাবাব চৌধুরী।

কাফরুল থানার এসআই সুজন কর্মকার বলেন, ‘মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে সেলিম ব্যাপারীকে একটি গাড়ি চাপা দেয়। ঘটনাস্থলে ওই গাড়ির নম্বর প্লেট পাওয়া গেছে। ঢাকা মেট্রো ঘ-১৩-৭৬৫৫ দিয়ে বিআরটিতে আবেদন করা হয়েছে। আশা করি, বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।’

তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার পর লাশ উদ্ধার করে প্রথমে থানায় এরপর ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে নেওয়া হয়। সেলিম ব্যাপারীর মেয়ে জামাই আরিফুল ইসলাম রাতেই বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলা নম্বর-১৮, ২০/০৬/২০১৮ইং। মামলার তদন্ত চলছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য বলেন, ঘটনার সময় সাবাব চৌধুরী একাই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তিনি মদ্যপান অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তার পরনে এক কালারের শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা ছিল।

সেলিম ব্যাপারীর মেয়ে সাদিয়া আক্তার তামান্না বলেন, ‘রাত সাড়ে ৯টার দিকে সবশেষ বাবার সঙ্গে কথা হয়। মেয়ের বাসায় রাতে দাওয়াত খেতে যাওয়ার কথা ছিল। বাবা বলেন, ডিউটি শেষ করে গাড়ি জমা দিয়েছি। গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি, তোমার বাসায় যাব। এরপর মাকেও ফোন করে জানিয়েছে, তোমরা ঘুমিয়ে পড়। আমি তামান্নার বাসায় যাব। এর কিছুক্ষণ পর রাত ১০টার দিকে আমার শ্বশুরের ফোনে কল করে কে যেন জানিয়েছে, বাবা অ্যাকসিডেন্ট করেছে, যেতে হবে।

মেয়ে তামান্না বলেন, ‘আমার বাবা নাওয়ার প্রপার্টিস নামে একটি ডেভেলপার কোম্পানিতে এমডির গাড়ি চালক ছিলেন। ওই এমডি রাজধানীর নাখালপাড়ায় থাকেন।’

তিনি জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশালে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ বরিশালে নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে একরামুল কবির চৌধুরীর সরকারি মোবাইল নম্বর ও তার স্ত্রী নোয়াখালীর কবির হাট উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুন্নাহার শিউলিকে একাধিক ফোন করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।

এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি