কলাম

এবারের নির্বাচন সাঈদী মুক্তির নির্বাচন

মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী প্রতিহিংসার শিকার। এ ট্রাইব্যুনাল আন্তর্জাতিক হলেও, এর বিচারক ও অপরাধী সবাই বাঙ্গালী। আওয়ামীলীগের বিচারকগণ এ ট্রাইব্যুনালে বসে পাকবাহিনীর পরিবর্তে শুধু নিজের দেশের নাগরিকদের অভিযুক্ত করেছেন। তারা প্রমাণ করেছেন, ১৯৭১ সালে সকল অপরাধকর্ম বাঙ্গালিরাই করেছে। পাকবাহিনী অপরাধী নয়। বাঙ্গালিরাই ৩০লাখ শহীদের ঘাতক। দেলোয়ার হোসেন সাঈদী তেমনি একজন বাঙ্গালী ঘাতক। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে দেশেই ছিলেন। পাকবাহিনী থেকে বাঁচতে ভারতে যাননি। তিনি বঙ্গবন্ধু জামাতা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত ড. ওয়াজেদ মিয়াসহ যুদ্ধকালে মহকুমা প্রশাসক ম.খা. আলমগীর ও অন্যান্যদের মতো পাকিস্তান সরকারের বেতনভুক্ত আমলা বা ভাতাপ্রাপ্ত রাজাকার ছিলেন না। তিনি বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে কোলাবরেটরস্ বা দালাল আইনে পরিচালিত মামলার আসামীও ছিলেননা। তিনি ছিলেন যুদ্ধাক্রান্ত, ভুক্তভোগী ও একজন সাধারণ বাঙ্গালী। তিনি বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দানকারী সাড়ে সাত কোটি বীর বাঙ্গালির অন্তর্ভুক্ত। অথচ স্বাধীনতার ৪০ বছর পর, তিনি বাংলাদেশের আওয়ামী আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত।
মাওলানা সাঈদী যে ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত হয়েছেন, এটি বিশ্বাসঘাতক মীরজাফরদের ট্রাইব্যুনাল। মীরজাফর যেভাবে নিজ দেশের স্বাধীনতা ইংরেজদের কাছে বিকিয়েছিল, তেমনি আওয়ামী বিচারকগণ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে পাকবাহিনীর পরিবর্তে বাঙ্গালীদের অভিযুক্ত করে নিজ দেশকে কলঙ্কিত করেছে। তারা পাকবাহিনীর অপরাধ খুঁজে পায়নি। তারা পাকবাহিনীর অপরাধে সাঈদীকে অভিযুক্ত করেছে। এ বিচারে পাকিস্তানিরা কলঙ্কিত হয়নি, বাঙ্গালীরাই কলঙ্কিত হয়েছে। এখন বাংলাদেশের নাগরিকগণ বিদেশে গেলে ঘাতক, যুদ্ধাপরাধী ও তাদের প্রজন্ম হিসেবে লান্থিত হয়। পাকিস্তানিরা লান্থিত হয়না। আওয়ামী বিচারকগণ তাদের নিজস্ব আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে সাঈদীকে অভিযুক্ত করে এভাবেই বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করেছে।
দেশের জনগণ বাংলাদেশকে যেভাবে চেনে, সাঈদীকেও তেমনি চেনে। সাঈদী বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী প্রতিহিংসার শিকার, জনগণ তা ভালোভাবেই জানে। জনগণ সাঈদীর জন্য প্রাণ দিতেও জানে। সাঈদীকে চাঁদে দেখার গুজবে শত শত মানুষ গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে মাত্র একদিনে। সাঈদীভক্ত এ বিশাল জনতা সাঈদীকে মুক্ত করতে জীবন দিয়ে হলেও ভূমিকা রাখবে, একাদশ নির্বাচনে। তারা আওয়ামীলীগকে হটাবে, মূলত দুটি কারণে। তাহলো- সাঈদীর মুক্তি ও বাংলাদেশ থেকে যুদ্ধাপরাধের কলঙ্ক মোচনে। তাই এবারের শ্লোগান- একাদশ নির্বাচন সাঈদী মুক্তির নির্বাচন। একাদশ নির্বাচন কলঙ্ক মুক্তির নির্বাচন।
এ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ। এ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের পরাজয় হলে, সাঈদী মুক্ত হবে। আর সাঈদী মুক্ত হলে, বাংলাদেশ যুদ্ধাপরাধের কলঙ্কমুক্ত হবে। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা বাস্তবায়ন হবে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দানকারী ১৯৭১ এর সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালী মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃত হবে। প্রাণ বিসর্জনকারী ৩০লাখ শহীদও মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃত হবে। প্রচলিত ২লাখ মুক্তিযোদ্ধা তালিকা, প্রদত্ত ভাতা ও মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আর বাঙ্গালী নয়, পাকবাহিনী অভিযুক্ত হবে।