করোনা কর্ণার

করোনায় মৃত্যুর মিছিল দেখতে দেখতে নিউইয়র্কে চিকিৎসকসহ দুই স্বাস্থ্যকর্মীর আত্মহত্যা

নিউইয়র্কে চিকিৎসকসহ দুজন স্বাস্থ্যকর্মী আত্মহত্যা করেছেন। ওই দুজন হলেন নিউইয়র্ক প্রেসপেটেরিয়ান হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন লরনা ব্রিন (৫৯) ও এস্টোরিয়া এলাকায় ইমার্জেন্সি সার্ভিসে কর্মরত প্যারামেডিক জন মনডেলো (২৩)। অনেকেই বলছেন, নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর এ তাণ্ডব অনেকেই সামাল দিতে পারছেন না। তাই বাধ্য হয়ে আত্মহত্যা করেছেন তাঁরা।

নিউইয়র্কে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে নগরীর হাসপাতালগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। মানুষ জরুরি বিভাগে আসছে, আর মারা যাচ্ছে। হাসপাতালে রোগী রাখার জায়গা ছিল না, পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন ছিল না। চিকিৎসার নগরী হিসেবে খ্যাত নিউইয়র্কের চিকিৎসকেরাই অসহায় হয়ে পড়েন। শুরুতে তাঁদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার অভাব ছিল, ছিল না আগাম কোনো প্রস্তুতি। অনেক চিকিৎসক অজান্তেই আক্রান্ত হয়েছেন, অনেকের মৃত্যুও হয়েছে।

প্রেসপেটেরিয়ান হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে গিয়ে লরনা ব্রিন চিকিৎসা দিতে গিয়ে নিজে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। কাজ বন্ধ করে বাসায় থেকে সুস্থ হওয়ার পর আবারও হাসপাতালে যোগ দেন। আরও কিছুদিন বিশ্রামের জন্য হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ তাঁকে বাসায় ফেরত পাঠায়। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে ভার্জিনিয়ায় নিকটাত্মীয়ের কাছে রাখা হয়। ২৪ এপ্রিল সেখানেই লরনা ব্রিন আত্মহত্যা করেন।

পরিবারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তবে পরিবার বলেছে, লরনা ব্রিন করোনায় সংক্রমিত মানুষের মৃত্যু নিয়ে কথা বলছিলেন। হাসপাতালে এসেই অনেকের মৃত্যু হতো বলে বিমর্ষ থাকতেন ব্রিন।

লরনা ব্রিনের বাবা চিকিৎসক ফিলিপ ব্রিন বলেন, লরনা ব্রিন এত মৃত্যু নিতে পারছিল না। করোনা যোদ্ধার সামনের সারির তালিকায় যেন লরনা ব্রিনকে স্মরণ করা হয়।

এর আগে ২৪ এপ্রিল নগরীর এস্টোরিয়া এলাকায় ইমার্জেন্সি সার্ভিসে কর্মরত প্যারামেডিক জন মনডেলো আত্মহত্যা করেছেন। তিনি নিজের পুলিশ কর্মকর্তা বাবার পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন। গত দুই মাসে নগরীর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ব্রঙ্কসের ক্লারমন্টে ইমার্জেন্সি স্টেশনে কাজ করতেন জন। পুলিশ বলেছে, এত মৃত্যুর দৃশ্য একসঙ্গে দেখে মানসিকভাবে নিজেকে সামাল দিতে পারেননি দুজন।