বিনোদন

বাংলা সিনেমায় ‘মুকুটহীন নবাব’-কে হারানোর এক যুগ

বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেতা আনোয়ার হোসেন। ‘নবাব সিরাজউদ্দৌল্লাহ’ ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করে বাংলার সিনেমার ‘মুকুটহীন নবাব’ উপাধি পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে ১৩ সেপ্টেম্বর ৮২ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন পরোলোক গমন করেন তিনি। আজ এই অভিনেতার ১২ তম মৃত্যুবার্ষির্কী। আনোয়ার হোসেনের জন্ম ১৯৩১ সালের ৬ নভেম্বর জামালপুর জেলার মুরুলিয়া গ্রামের মিয়াবাড়িতে। তিনি ছিলেন তার বাবা-মায়ের তৃতীয় সন্তান। বাবা এ কে এম নাজির হোসেন ছিলেন জেলা সাব-রেজিস্ট্রার। ১৯৫১ সালে জামালপুর হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে ময়মনসিংহ কলেজে ভর্তি হন। স্কুলজীবনে প্রথম অভিনয় করেন আনোয়ার হোসেন। আসকার ইবনে সাইকের লেখা ‘পদক্ষেপ’ তার প্রথম অভিনীত প্রথম নাটক। ১৯৫৭ সালে আনোয়ার হোসেন ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৬১ সালে আনোয়ার হোসেন মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘তোমার আমার’ ছবিতে ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করেন। এরপর সালাহউদ্দিন পরিচালিত ‘সূর্যস্নান’ ছবিতে নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৬১ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ১৮টি ছবিতে কাজ করেন তিনি। ১৯৬৭ সালে ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ ছবিতে নবাবের চরিত্রে অভিনয় করে পান ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি। সিরাজের দেশপ্রেমের যন্ত্রণা দর্শকদের মনে জাগিয়ে দিতে পেরেছেন বলে ছবিটি প্রশংসিত হয়। পরে সালাহউদ্দিন, খান আতাউর রহমান, কাজী জহির, আমজাদ হোসেন, ইবনে মিজান, আলমগীর কবির, কামাল আহমেদ, জহির রায়হান, নারায়ণ ঘোষ মিতা, সুভাষ দত্ত, নজরুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, মোস্তফা মেহমুদ, এ জে মিন্টু, চাষী নজরুল ইসলাম, কাজী হায়াৎসহ অনেক নামীদামি পরিচালকের ছবিতে অভিনয় করেছেন আনোয়ার হোসেন। দেশে নির্মিত ‘সূর্যস্নান’, ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘জয় বাংলা’, ‘অরুণোদ্বয়ের অগ্নিসাক্ষী’, ‘লাঠিয়াল’, ‘পালঙ্ক’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘নাজমা’, ‘সূর্যগ্রহণ’, ‘সূর্যসংগ্রাম’, প্রেমের সমাধী’, ‘দায়ী কে’, ‘সত্য মিথ্যা’র মতো ছবির অভিনেতা হিসেবে আনোয়ার হোসেন থেকে যাবেন যুগের পর যুগ দর্শকদের হৃদয়মাঝে। আনোয়ার হোসেন দীর্ঘ পাঁচ দশক কাজ করেছেন ছবির পর ছবিতে। দীর্ঘ এ সময়ে প্রায় ৩৫০ ছবিতে অভিনয় করেছেন। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন নিগার পুরস্কার। ১৯৮৫ সালে তিনি একুশে পদক ও দুবার বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন। ২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আসরে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন এই গুণী শিল্পী।

এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস