বিনোদন

আমার অভিনয়শিল্পী হওয়ার পেছনে শ্রীদেবীর অবদান রয়েছে : প্রিয়াঙ্কা

অনেকটা হঠাৎ করেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন বলিউড অভিনেত্রী শ্রীদেবী। তার মৃত্যুতে শোকাহত তার পরিবার, সহকর্মী ও ভক্তরা। ননদের ছেলের বিয়েতে দুবাই গিয়েছিলেন এ অভিনেত্রী। সেখানেই দুর্ঘটনাবশত বাথটাবে ডুবে তার মৃত্যু হয়।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীদেবীর মৃত্যুর খবর শুনে যারা সবচেয়ে আগে শোক প্রকাশ করেন তাদের একজন অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। এবার টাইম ম্যাগাজিনে শ্রীদেবীকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন তিনি।

প্রিয়াঙ্কা লেখেন, ‘তিনি রুপালি পর্দার জন্যই জন্মেছিলেন। একজন শিল্পী হিসেবে তিনি মাত্র ৪ বছর বয়সে ডাক পেয়েছিলেন, সিনেমার সেট খেলার জায়গায় পরিণত করেছিলেন। পরিচালকরা ছিল তার বন্ধু এবং ৭০ মিলিমিটার সিনেমা ছিল তার ক্যানভাস। তার হিসেবে অন্য কোনো পথ ছিল না। জন্মের পর তার নাম রাখা হয় আম্মা ইয়াঙ্গার আয়ুপপান। তবে শ্রীদেবী হয়ে ভারতীয় সিনেমার ধারা বদলে দিয়েছিলেন তিনি।

ক্যামেরার সঙ্গে শ্রীদেবীর অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল এবং এটিও তাকে এমনভাবে ভালোবেসেছিল যা অন্য কাউকে বাসেনি। তার মুখভঙ্গির প্রতিটি দিক এবং একইসঙ্গে তার চোখের ভঙ্গি খুব নিখুঁতভাবে তুলে ধরেছে। তিনিও বিনিময়ে একে একইরকম ভালোবাসা দিয়েছেন। সাধারণত শ্রীদেবী খুবই লাজুক ও শান্ত তবে এটি থেকে বেরিয়ে এসে তিনি যে পারফরম্যান্স করেছেন তাতে দর্শক শ্বাসরুদ্ধ হয়ে গেছেন। তারা চাইত তার নাচ যেন শেষ না হয়, একটু বেশি সময় চলতে থাকুক।

২৪ ফেব্রুয়ারি ৫৪ বছর বয়সে মৃত্যুর সময় পর্যন্ত শ্রীদেবী ছিল ভারতের প্রথম নারী সুপারস্টার। পাঁচ দশকের অভিনয় ক্যারিয়ারে ৩০০টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। ভারতের বিভিন্ন ভাষার (তেলেগু, তামিল, কন্নড়, মালায়ালাম ও হিন্দি) সিনেমার মাধ্যমে তিনি বিশ্বের দর্শককে মুগ্ধ করেছেন। সহ-অভিনেতার সাহায্য ছাড়া তিনি নিজেই প্রত্যেক সিনেমায় খ্যাতি অর্জন করেছেন, দর্শক টেনেছেন এবং বক্স অফিস সচল রেখেছেন।

সবাই তাকে পছন্দ করত এবং তার মতো হতে চাইত। তিনি ছিলেন শিশুসুলভ, প্রাপ্তবয়স্ক, মজার, গম্ভীর, রূপসী ও আবেদনময়ী অর্থাৎ একজন প্রকৃত অভিনয়শিল্পী। শ্রীদেবী এমন একটি ধারা রেখে গেছেন যা আমাদের সবার নাগালের বাইরে। এর ভিত্তি তৈরি হয়েছে আত্মত্যাগ, প্রতিভা, কঠোর পরিশ্রম এবং তার প্রতি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদের মাধ্যমে। 

তিনি আমার শৈশবজুড়ে ছিলেন। আমার অভিনয়ে আসার একটি কারণও তিনি। প্রথম যখন তার মৃত্যুর খবর শুনি, আমি নিশ্চল হয়ে গিয়েছিলাম। আমি শুধু তখন তার সিনেমার গানগুলো শুনেছি, তার আগে সাক্ষাৎকারগুলো পড়েছি এবং তার সিনেমার সেরা দৃশ্যগুলো বারবার দেখেছি। জানি, আমি একা নই, তার লাখ লাখ ভক্ত একইরকম আঘাত পেয়েছেন। তার সঙ্গে ভক্তদের বন্ধন এতটাই মজবুত ছিল যে আমাদের সবার তাকে ঘিরে স্মৃতি রয়েছে। 

তিনি আমাদের ছেড়ে খুব দ্রুত চলে গেছেন। তার সঙ্গে আমার শেষ স্মৃতি গত বছর ডিসেম্বরে একটি অনুষ্ঠানের লাল গালিচায়। ক্যামেরার আলোর ঝলকানির মাঝে তিনি আমাকে শক্ত করে আলিঙ্গন করেছিলেন এবং উচ্ছ্বাস নিয়ে তার দুই মেয়ে জানভি ও খুশিকে নিয়ে কথা বলছিলেন। তাকে খুবই আন্তরিক মনে হয়েছিল এবং তিনি আমার সঙ্গে আবার দেখা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

দেবদূতরা কখনই মরে না। তারা শুধু অন্য দুনিয়ায় জ্বলজ্বল করে। তাই আমি তাকে দেখার জন্য আকাশে তাকিয়ে থাকি। আপনার জাদুর জন্য ধন্যবাদ শ্রীদেবী ম্যাডাম। আজীবন আপনার ভক্ত হয়ে থাকব।’


এলএবাংলাটাইমস//এলআরটি