ইউরোপ

নেদারল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লালগালিচা সংবর্ধনা

নেদারল্যান্ড ডেল্টা
প্লান-২১০০ বাস্তবায়নে
বাংলাদেশকে সর্বাত্মক
সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস
দিয়েছে। নেদারল্যান্ডের
অবকাঠামো ও পরিবেশমন্ত্রী
মেলানি সুলজ ভ্যাঁ হেগেন গতকাল
বলেন, বাংলাদেশে পানি
খাতের উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে ডাচ
সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। আমরা
বাংলাদেশের ডেল্টা প্লান-২১০০
বাস্তবায়নে সব ধরনের সহযোগিতা
দিয়ে যাবো। নেদারল্যান্ডের
প্রশাসনিক রাজধানী হেগের
গ্রান্ড হোটেল আমরাথ কুরহাউসে
ডাচ ডেল্টা অ্যাপোচ
উপস্থাপনকালে তিনি তার এ
আশ্বাস দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।
নেদারল্যান্ডের অবকাঠামো ও
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই
অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে দু’দেশের পানিসম্পদ
বিশেষজ্ঞগণ যোগ দেন।
নেদারল্যান্ডের স্টাফ ডেল্টা
প্রোগ্রাম কমিশনার জাস ভ্যাঁ
আলপনেস এবং বাংলাদেশের
পরিকল্পনা কমিশনের জেনারেল
ইকোনমিক ডিভিশনের যুগ্ম-প্রধান
মফিদুল ইসলাম নেদারল্যান্ডের
ডেল্টা অ্যাপ্রোচ এবং
বাংলাদেশের ডেলটা
প্লান-২১০০-এর ওপর সংক্ষিপ্ত বিবরণ
তুলে ধরেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ
মাহমুদ আলী, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম,
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. আবুল
কালাম আজাদ, বাণিজ্য
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব
হেদায়েত উল্লাহ আল মামুন,
পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক, নৌ-
সচিব শফিক আলম মেহেদী এবং
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি
ইহ্্সানুল করিম অন্যান্যের মধ্যে
উপস্থিত ছিলেন।ডাচ মন্ত্রী বলেন,
বন্যা নিয়ন্ত্রণে নেদারল্যান্ড ও
বাংলাদেশকে অভিন্ন চ্যালেঞ্জ
মোকাবেলা করছে। তাই এসব
চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের
সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা
প্রয়োজন। ডাচ মন্ত্রী ডেল্টা
প্লানকে দু’দেশের জন্যই অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বলেন,
পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সমস্যার
বাস্তব সমাধানের জন্য আমাদের
জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করা
প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে ডাচ মন্ত্রী
বলেন, তার দেশের দুই-তৃতীয়াংশ
ভূমি বন্যা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ
বিষয়টি বিবেচনায় রেখে দীর্ঘ ৬০
বছরের ডেল্টা প্লান-১৯৫৩
সফলভাবে বাস্তবায়নের পর আমরা
আরো একটি ডেল্টা প্লান গ্রহণ
করেছি।তিনি বলেন, ডাচ সরকার
সমুদ্র পৃষ্ঠের ৪ মিটার নিচুতে
হারলেম লেক ভরাট করে
আমস্টারডামে আমস্টারডাম
শিফোল এয়ারপোর্ট সেন্টার
নির্মাণ করেছে। তিনি বলেন, কথা
আছে, সৃষ্টিকর্তা পৃথিবী সৃষ্টি
করেছেন, আর ডাচরা নেদারল্যান্ড
সৃষ্টি করেছে। ডাচ মন্ত্রী
রোটারডাম বন্দর উন্নয়নের উল্লেখ
করে বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণের
মাধ্যমে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ
ঘটাতে হবে। পরে শেখ হাসিনা
হেলিকপ্টারে করে ডেলটিক
আইল্যান্ড এবং জাহাজে করে
হারবার পরিদর্শন করেন। এর আগে
বৈদেশিক বাণিজ্য ও উন্নয়ন
সহযোগিতা বিষয়ক ডাচ মন্ত্রী
লিলিয়ান প্লুমেন এবং
অবকাঠামো ও পরিবেশমন্ত্রী
মেলানি সুলজ হোটেল স্যুটে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে
সাক্ষাৎ করেন। গতকালের কর্মসূচির
মধ্যে আরো ছিল, ডাচ প্রধানমন্ত্রী
মার্ক রুটের সঙ্গে তার সরকারি
বাসভবনে বিকেলে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার বৈঠক। বৈঠক শেষে
দু’দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক
কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ারও
কথা। প্রধানমন্ত্রী তার সম্মানে
সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এক
নৈশ ভোজ সভায় যোগ দেবেন
বলেও কথা রয়েছে। শেখ হাসিনার
এদিন রয়েল প্যালেসে সে দেশের
রাণী ম্যাক্সিমার সঙ্গে সাক্ষাৎ
করার কথা।লালগালিচা
সংবর্ধনাএর আগে নেদারল্যান্ডের
প্রধানমন্ত্রী মার্করুটের আমন্ত্রণে
সেদেশে ৩ দিনের সরকারী সফরে
গত মঙ্গলবার রাতে আমস্টারডামে
পৌঁছার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনাকে লালগালিচা
সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। বিমান
বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি
ভিভিআইপি ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী ও
তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে
নেদারল্যান্ড সময় রাত ৮টা ৩০
মিনিটে আমস্টারডাম শিফোল
বিমানবন্দর সেন্টারে অবতরণ করে।
ডাচ অবকাঠামো ও পরিবেশ মন্ত্রী
মেলানি সুলজ ভান হায়েজেন,
নেদারল্যান্ডে নিযুক্ত
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ
মুহাম্মদ বেলাল এবং ঢাকায় নিযুক্ত
ডাচ রাষ্ট্রদূত লেওনি মারগারেতা
কুয়েলেনায়েরা বিমানবন্দরে
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
আমস্টারডাম শিফোল বিমানবন্দর
সেন্টারে উষ্ণ সংবর্ধনা দেয়ার পর
প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিক মটর
শোভাযাত্রা সহকারে
নেদারল্যান্ডের প্রশাসনিক
রাজধানী হেগ নগরীতে গ্র্যান্ড
হোটেল আমরাথ কুরহাউসে নিয়ে
যাওয়া হয়। সফরকালে তিনি এ
হোটেলে অবস্থান করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
হোটেলে পৌঁছার পর অল
ইউরোপীয়ান আওয়ামী লীগের
নেতা-কর্মীসহ বিপুলসংখ্যক
প্রবাসী বাংলাদেশীরা তাকে
অভিনন্দন জানান। আওয়ামী
লীগের নেতা-কর্মীদের পক্ষে দু’টি
ছোট্ট শিশু হোটেল লাউঞ্জে
প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া
উপহার দেয়। আমস্টারডাম যাওয়ার
পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
আবুধাবীতে ৫ ঘণ্টা যাত্রা
বিরতি করেন।পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ
মাহমুদ আলী, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম,
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম
আজাদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের
সিনিয়র সচিব হেদায়েত উল্লাহ
আল মামুন, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল
হক, নৌ-পরিবহন সচিব শফিক আলম
মেহেদী এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস
সচিব ইহসানুল করিম অন্যান্যের মধ্যে
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন।
এছাড়া, এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ
এবং ডাচ-বাংলা চেম্বার অব
কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতৃবৃন্দসহ
বাংলাদেশের একটি ১৯ সদস্যের
ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল
নেদারল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর
সফরসঙ্গী রয়েছেন।