রাশিয়ার দখল করা ক্রিমিয়ায় সিরিজ ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। শনিবার রাতে অন্তত ১০টি ড্রোন আঘাত হানে বলে দাবি করেছেন অঞ্চলটিতে রুশ নিযুক্ত কর্মকর্তারা। হামলার পর বিভিন্ন স্থান থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা যায়। রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পাল্টা হামলার প্রস্তুতির মধ্যেই এ ঘটনা ঘটল। তবে এর দায় স্বীকার বা কোনো মন্তব্য করেনি কিয়েভ। সম্প্রতি তেল শোধনাগার ও সামরিক স্থাপনাসহ একাধিক স্থানে হামলা হয়েছে ক্রিমিয়ায়। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের।
অঞ্চলটির বৃহত্তম শহর সেভাস্টাপোল বন্দরের রুশপন্থি গভর্নর মিখাইল রাজভোজায়েভ বলেন, অন্তত তিনটি ড্রোন ধ্বংস বা বিধ্বস্ত হয়েছে। টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে তিনি বলেন, এসব হামলায় তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
২০১৪ সালে অবৈধভাবে ক্রিমিয়াকে নিজ ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে নেয় রাশিয়া। গত বছরে ইউক্রেনে শুরু করা হামলায় এই অঞ্চলটি ব্যবহার করছে মস্কো। ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা এবং রুশ বাহিনীকে সব ধরনের অস্ত্র, গোলাবারুদসহ সেনা পাঠানোর মূল বাহক এই ক্রিমিয়া অঞ্চল।
শীত মৌসুম শেষে এখন উভয় পক্ষই পূর্ব ইউক্রেনে নতুন করে হামলা-পাল্টা প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুত। পশ্চিমা উন্নত সামরিক সরঞ্জামের নতুন সরবরাহ পাচ্ছে ইউক্রেন। এর মধ্যে ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া কর্মীবাহক রয়েছে। রুশ বাহিনীও নতুন করে আক্রমণ চালাতে অবস্থান গেড়েছে।
এদিকে, ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিষেবা শনিবার জানিয়েছে, দক্ষিণের খেরসন অঞ্চলে রুশ বাহিনীর হামলায় ৬ ইউক্রেনীয় মাইন বিশেষজ্ঞ নিহত হয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত মাইন অপসারণ করার সময় এই হামলা চালানো হয়।
রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান সেরহি ক্রুক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, তাঁরা তাঁদের বিশেষজ্ঞ দলের কয়েকজনকে হারিয়েছেন। হামলায় এক প্যারামেডিক এবং অন্য একজন আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি। বিশেষজ্ঞরা শনিবার পর্যন্ত ৭ হাজার ৩০০টি মাইন অপসারণ করেছেন। এদিকে রুশ হামলার শঙ্কায় আইন প্রয়োগকারী ও সামরিক বাহিনীর কাজের সুবিধার্থে খেরসনের আঞ্চলিক রাজধানীতে এখনও কারফিউ বলবৎ রয়েছে।
অস্ত্র সরবরাহ না দিলে পূর্ব ইউক্রেনের শহর বাখমুত থেকে সেনা গুটিয়ে নেওয়ার হুমকির পর মস্কো অস্ত্র পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওয়াগনার প্রধান। টেলিগ্রাম চ্যানেলে ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বলেন, বাখমুতে টানা এক মাস হামলা চালানোর মতো প্রয়োজনীয় পরিমাণ গোলাবারুদ এবং অস্ত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন তিনি। অস্ত্র ফুরিয়ে যাওয়ায় বাখমুতে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন জানিয়ে গত তিন দিন আগে সেনাবহর গুটিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।
ইউক্রেনে হামলার কারণে রাশিয়া আগামীতে শ্রমিক সংকটে পড়বে, যার বিরূপ প্রভাব পড়বে দেশটির অর্থনীতিতে– এমন পূর্বাভাস দিয়েছে যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইউক্রেন যুদ্ধের নিয়মিত আপডেটে জানায়, দেশটিতে বাড়বে মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি। কারণ, গত তিন বছরে রাশিয়ার জনসংখ্যা ধারণার চেয়ে ২০ লাখ বেশি কমেছে। বার্ধক্যের পাশাপাশি অধিকসংখ্যক নাগরিক রাশিয়া ছাড়ছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে আরও বলা হয়, গত বছর ১৩ লাখ মানুষ রাশিয়া ছেড়েছে। রুশ যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ধারণা, ১ লাখ আইটি কর্মী গত বছর অন্য দেশে চলে যাওয়ার পর আর ফেরেনি।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস