ফিচার

কবিতা

স্বাধীন বাংলাদেশ
পারভীন আকতার  
তোমাকে কাছে পাবে বলে
হে স্বাধীনতা,কপাট খুলে বসে আছে
নুরজাহানের অভাগী জননী।

তোমাকে জড়িয়ে ধরবে বলে
হে স্বাধীনতা,শাড়ীছেঁড়া সালেহারা
বন্দী ঘরে কেঁদেকেটে অস্থির।

তোমাকে দেখতে পাবে বলে
হে স্বাধীনতা,উৎ পেতে থাকে জোয়ান
গেরিলা বাহিনীর কামান অস্ত্র।

তোমাকে স্নেহপরশে ডাকবে বলে
হে স্বাধীনতা,রাখালের গরুপালে হানা
জুলুম নৃশংসতা সয়ে গেল উদ্বাস্তু।

তোমাকে সম্পূর্ণ পতাকা দেবে বলে
হে স্বাধীনতা,যুবকের তাজাল্লী প্রাণ লয়ে
থর থর কাতরায় ধড়ফড় সিংহল দেহ।

তোমাকে সবুজ চাদরে মুড়িয়ে দেবে বলে
হে স্বাধীনতা, বীরাঙ্গনার জামার ভাঁজ ভেঙেছে
হায়েনারা লুটপাট করেছে সখিনার সম্ভ্রম।

তোমাকে বুকে আগলে রাখবে বলে
হে স্বাধীনতা,এক কালজয়ী নেতার ডাকে
সমবেত জনতার আর্তনাদ অখন্ড বাংলায়।

তোমাকে স্বজাতি মানচিত্র দেবে বলে
হে স্বাধীনতা,গর্জে উঠেছিল সাতলক্ষ নির্ভীক
লাঠিসোঁটা বাশেঁরগাঁট বেড়াভাঙ্গা স্রোত।

তোমাকে হাতে নিয়ে আদর করবে বলে
হে স্বাধীনতা,সন্তানের বুকে বুলেট লাগিয়ে
তুচ্ছ করেছিল জীবনের মায়া বাঙালী।

হে স্বাধীনতা,দরদে কাছে আসো ওদের,
আশায় আকর বেঁধেছিল যে মুক্তিযোদ্ধারা।
তোমাকে আলতো করে ছুঁয়ে দিতে চায়,
নির্বিঘ্নে তোমার মাটিতে হাঁটতে চায়,
বিবেকহীন অরাজকতার ধূমবর্ণ,
কালি ছন্দে নির্বাসনে দিতে চায় এই জনতা।
স্বাধীনতার তূর্যগহব্বরে সুপেয় জল চায়,
দেশপ্রেমে বিভোর সৃষ্টিশীল সভ্যজাতি চায়।

খেলায় ছলায় সুযোগ নিয়ে আর করোনা হেলা
সময়ের প্রবাহ কে রাখে ধরে মুক্ত বিহঙ্গ!
স্বকীয়তায় বাঁচো,প্রাণে ভালেবাসো বাংলাদেশ।
আমার দেশ,মায়ের দেশ, পিতার বুকফাটা কান্না
ওগো প্রিয় স্বদেশ,তিরিশলক্ষ শহীদের বাংলাদেশ।