আন্তর্জাতিক

খাসোগির মৃতদেহ কোথায়, জানতে চান এরদোয়ান

সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে 'পরিকল্পিতভাবে' হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ তুলে তার মৃতদেহের সন্ধান চেয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তায়েপ এরদোয়ান।

নিজ দলের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে এক বক্তব্যে মঙ্গলবার তিনি এ কথা জানান বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

গত ২ অক্টোবর তুরস্কে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হওয়া সৌদি রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক খাসোগিকে নানা নাটকীয়কতার পর  অবশেষে হত্যার কথা স্বীকার করে সৌদি আরব।

এরদোয়ান বলেছেন, তার কাছে জোরালো প্রমাণ রয়েছে যে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগজির মৃত্যু কোন দুর্ঘটনা নয়, বরং এক পরিকল্পিত অপারেশনের মাধ্যমেই তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।

খাসোগির মৃতদেহ কোথায়, এবং কে তাকে হত্যা করার আদেশ দিয়েছে- বক্তব্যে সৌদি আরবের কাছে তা জানতে চান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় সৌদি আরবে ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ১৮ জনকে ইস্তাম্বুলে এনে তাদের বিচার করতে হবে, এবং এ খুনে ভুমিকা রেখেছে এমন সবারই শাস্তি পেতে হবে।

এর আগে এরদোয়ান বলেছিলেন, জামাল খাসোগজিকে কিভাবে খুন করা হয়েছে- তার 'নগ্ন সত্য' তিনি প্রকাশ এরদোয়ান বলেন, হত্যাকাণ্ডের আগে তিনটি দলে ভাগ হয়ে ১৫ জন সৌদি নাগরিক পৃথক পৃথক বিমানে করে ইস্তাম্বুলে আসে। হত্যাকাণ্ডের এক দিন আগে এই দলটির কয়েকজন কনস্যুলেটের কাছে বেলগ্রাদ বনভূমিতে যায়।

কিছু কাগজপত্র তোলার জন্য গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর নিখোঁজ হন জামাল খাসোগি। ৫৯ বছর বয়সী জামাল খাসোগি আল-ওয়াতান পত্রিকা ও সৌদি টিভির সাবেক সম্পাদক ছিলেন। তিনি এক সময় সৌদি রাজপরিবারের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং ঊর্ধ্বতন সৌদি কর্মকর্তাদের উপদেষ্ট ছিলেন।

তার কয়েকজন বন্ধুকে গ্রেফতার করার পর জামাল খাসোগি সৌদি আরব ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং সেখান থেকে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছিলেন ও বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন।

খাসোগি মৃত্য রহস্য নিয়ে জলঘোলা হয়েছে অনেক। প্রথম পর্যায়ে তুরস্কের পক্ষ থেকে বলা হয়, খাসোগিকে কনস্যুলেটে হত্যা করা হয়েছে এবং এর পক্ষে তথ্য প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে। তবে বারবার সৌদি কর্তৃপক্ষ এ দাবি অস্বীকার করে আসছিল।

এর মধ্যে গত মঙ্গলবার তুরস্ক ও সৌদি আরব সফরে যান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও এ বিয়ষে কথা বলেন সংবাদ সম্মেলনে। ২ অক্টোবরের পর নানা নাটকীয়তা আর আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে এর প্রভাব পড়ার পর অবশেষে শনিবার সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার কথা স্বীকার করে সৌদি আরব।

দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রাথমিক তদন্তের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, খাসোগি সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করার পর কয়েকজনের সঙ্গে তার ‘ধস্তাধস্তি’ হয়। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরই খাসোগির মৃত্যু হয়।