আন্তর্জাতিক

'হামলা হলে রাশিয়ায় আরও নিষেধাজ্ঞা'

মস্কোপন্থি ইউক্রেনের বিদ্রোহীরা দেশটির গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী মারিবালে আক্রমণ চালালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লঁরা ফ্যাবিয়াস গতকাল এ হুমকি দেন। এর আগে ইউক্রেন মারিপলের ৫ লাখ অধিবাসী বিচ্ছিন্নতাবাদী মস্কোপন্থিদের আক্রমণের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা রেলরোড শহর দেবালৎসেভের দখল নেওয়ার পর তাদের পরবর্তী লক্ষ্য হতে পারে মারিপল। এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে আত্মঘাতী কাজ করেছে কিয়েভ। এর ফলে মস্কো সেখানে সরাসরি গ্যাস সরবরাহ করবে। খবর :এএফপি, রয়টার্স, আলজাজিরা।


ফ্যাবিয়াস বলেন, 'এখন সমস্যা হচ্ছে মারিপলকে নিয়ে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এটাকেই তাদের পরবর্তী টার্গেট বানাতে পারে। কিন্তু আমরা বিদ্রোহীদের প্রত্যক্ষ মদদদাতা রাশিয়াকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, মারিপলের দিকে আক্রমণ পরিচালনার আভাস পাওয়া গেলেই তাদের বিরুদ্ধে আরও বেশি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। 
ফ্রান্সের ইনফো রেডিওর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, 'ইউরোপীয় ইউনিয়নে আবারও নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি তোলা হতে পারে।' 
এদিকে মঙ্গলবার বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধাদের প্রধান এদুয়ার্দ বাসুরিন বলেছেন, তারা এখন মারিপলসহ ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় পুরো সীমান্ত অঞ্চলের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার চিন্তাভাবনা করছেন। তবে তারা এটা ইউক্রেন সরকারের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তির মধ্য দিয়েই পাবেন বলে আশা করছেন। 
ইউক্রেন অভিযোগ করেছে, বিদ্রোহীরা মারিপলের কাছাকাছি গ্রামগুলোতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে অধিবাসীদের ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলছে। তবে বাসুরিন বলেছেন, এটা ইউক্রেন অতিরঞ্জিত করে বলছে। 
'মিথ্যাচারে' উষ্মা যুক্তরাষ্ট্রের : ইউক্রেন সংকট নিয়ে রাশিয়ার 'মিথ্যাচারে' উষ্মা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপীয় শক্তিগুলো যুদ্ধবিরতির চুক্তিগুলোর প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানানোর পর যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় একটি বিরল স্থিতাবস্থা দেখা যাওয়ার পরই এ প্রতিক্রিয়া দেখাল তারা। তবে পরিস্থিতি আপাতত শান্ত মনে হলেও এখনও যে কোনো মুহূর্তে তা উত্তপ্ত হয়ে ওঠার মতো অবস্থা রয়ে গেছে। ব্রিটেন বলেছে, তারা ইউক্রেনিয়ান সেনাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য সেনা পাঠানোর কথা ভাবছে। এদিকে ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক থেকেও রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, 'তারা (রাশিয়া) ক্রমাগত মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। সবকিছু ভুলভালভাবে করতে চাইছে।'
কেরি সেই স্নায়ুযুদ্ধের সময় থেকেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে পরিস্থিতিকে 'মিথ্যা'ভাবে উপস্থাপন করার অভিযোগ করেন। 

এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, ব্রিটেন ইউক্রেন সেনাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ৭৫ জন সেনা পাঠাবে। এদের মধ্যে কিছু চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেনের উদ্দেশে গেছে বলেও জানান তিনি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাবনা তিনি খতিয়ে দেখারও আহ্বান জানান।