আন্তর্জাতিক

আমাজনে আগুন: বাণিজ্য চুক্তি বন্ধের হুমকি ফ্রান্স-আয়ারল্যান্ডের

আমাজন বনের আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্রাজিল যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে, দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি বন্ধের হুমকি দিয়েছে ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ড। শুক্রবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁন বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো তার অবস্থান নিয়ে মিথ্যা বলেছেন।

আসন্ন জি-৭ সম্মেলনে আমাজনে অগ্নিকাণ্ড নিয়ে কথা বলবেন বলে জানান ম্যাক্রোঁন। তিনি বলেন, ‘আমাদের ঘর জ্বলছে। বারবার আমাজনে আগুন লাগার ব্যাপারটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা।’

এ মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক সুবিধা লাভের জন্য আমাজনের অগ্নিকাণ্ডকে ব্যবহার করছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।’

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট আরো বলেছেন, ‘কৃষকেরা অবৈধভাবে আগুন দিতে পারে। কিন্তু এটি নিয়ে বহির্বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর নাক গলানোর প্রয়োজন নেই।’

শুক্রবার ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সঙ্গে সেনাবাহিনী নামানোর চিন্তা করছেন।

পরিবেশবাদী দলগুলো দাবি করছে, আমাজন বনে যে আগুন লেগেছে তা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের নীতির কারণে হয়েছে। কিন্তু তিনি তা স্বীকার করতে চাচ্ছেন না। প্রেসিডেন্ট বন উজাড়ে কাঠুরে ও কৃষকদের উৎসাহিত করছেন বলে আগুনের ঘটনা ঘটছে।

ইউরোপীয় নেতারাও এই অগ্নিকাণ্ড নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতির প্রভাব নিয়ে তিনি অবগত। এজন্য তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্স (ইনপে) বলছে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত আমাজনের ব্রাজিল অংশে ৭২ হাজার ৮৪৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই বছরের প্রথম আট মাসে আগের বছরের তুলনায় ৮৫ শতাংশ বেশি অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। বেশিরভাগই হয়েছে আমাজন অঞ্চলে। আগুনে ‍সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তরের অঙ্গরাজ্য রনডোনিয়া।

ইনপের সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালে আমাজনের সাত হাজার ৫০০ কিলোমিটার বনাঞ্চল হারিয়ে গেছে, যা ২০১৭ সালের তুলনায় ৬৫ শতাংশ বেশি।