আন্তর্জাতিক

'মুসলমানদের রাষ্ট্রহীন করার হাতিয়ার এনআরসি'

ভারতের এনআরসি বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জিকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তু করার এবং মুসলমানদের রাষ্ট্রহীন করে তোলার একটি হাতিয়ার বলে অভিযোগ তুলেছে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্পর্কিত একটি ফেডারেল মার্কিন কমিশন। ইতিমধ্যেই আসামের চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা থেকে ১৯ লক্ষ নাগরিক বাদ পড়ার বিষয়টি খেয়াল করে শুক্রবার ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম জানিয়েছে, ভারতের এনআরসি নিয়ে বেশ কয়েকটি দেশি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করছে। সংস্থাটির দাবি, আসামের বাঙালি মুসলিম সম্প্রদায়ের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে, সুস্পষ্টভাবে নাগরিকত্বের জন্য একটি ধর্মীয় প্রয়োজনীয়তা প্রতিষ্ঠা করতে এবং মূলত মুসলমানদের রাষ্ট্রহীন করার উদ্দেশ্যেই এনআরসি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ভারত সরকার।

শুক্রবার প্রকাশিত 'ইস্যু ব্রিফ: ইন্ডিয়া' তে মার্কিন সংস্থাটি জানিয়েছে, এনআরসি 'ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তু করার একটি সরঞ্জাম এবং বিশেষত, ভারতীয় মুসলমানদের রাষ্ট্রহীন করে তোলা এর উদ্দেশ্য। ভারতের অভ্যন্তরে ধর্মীয় স্বাধীনতা চর্চার নিম্নমুখী প্রবণতার এটি একটি বড় উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।'

এদিকে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'এটি একটি বৈষম্যহীন প্রক্রিয়া, যাতে পক্ষপাতদুষ্টতা এবং অন্যায়ের কোনও অবকাশ নেই। কারণ এনআরসি-তে তথ্য জানানোর আবেদন ফর্মেই দেখা যায় যে আবেদনকারীদের ধর্ম জিজ্ঞেস করা হয়নি কোথাও।'

নীতি বিশ্লেষক হ্যারিসন আকিনসের তৈরি করা ওই প্রতিবেদনে ইউএসসিআইআরএফ অভিযোগ করেছে যে, ২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট এনআরসি তালিকা মুক্তি পাওয়ার পরেই বিজেপি সরকার এমন পদক্ষেপ নিয়েছে যা 'মুসলিম বিরোধী পক্ষপাতিত্বকেই প্রতিফলিত করে।'

সংস্থাটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, বিজেপি ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য একটি ধর্মীয় পরীক্ষা তৈরির লক্ষ্যে ইঙ্গিত দিয়েছে যাতে হিন্দুরা এবং কিছু ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বেঁচে যাবে ঠিকই, তবে বাদ পড়বেন মুসলমানরা।