আন্তর্জাতিক

বিশ্বে ধর্ষণের রাজধানী ভারত : রাহুল গান্ধী

বিশ্বে ধর্ষণের রাজধানী ভারত বলে উল্লেখ করেছেন কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী। আজ শনিবার দুপুরে কেরালার ওয়ানাডে আয়োজিত এক জনসভায় এ কথা বলেন তিনি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জিনিউজ’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্ষণ মামলার শুনানিতে অংশ নিতে যাওয়ার পথে অভিযুক্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে আহত হওয়ার দুই দিন পর মারা গেছেন ভারতের উত্তর প্রদেশের উন্নাও জেলার এক তরুণী। গতকাল শুক্রবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন রাহুল গান্ধি। জনসভায় তিনি বলেন, ‘বিশ্বের কাছে ধর্ষণের রাজধানী ভারত। বিদেশি রাষ্ট্রগুলির প্রশ্ন, কেন ভারত নিজের মেয়ে-বোনেদের নিরাপত্তা দিতে পারে না। উত্তরপ্রদেশের একজন বিজেপি বিধায়ক ধর্ষণের অভিযুক্ত এবং প্রধানমন্ত্রী একটা শব্দও বললেন না।’

ওই তরুণীর মৃত্যু নিয়ে এক টুইট বার্তায় রাহুল বলেন, ‘ন্যায় ও নিরাপত্তার জন্য লড়াই করতে করতে আরও এক মেয়ের মৃত্যু হলো।’

এদিকে, ওই তরুণীর মৃত্যু ঘিরে আজ সকাল থেকেই উত্তপ্ত উত্তর প্রদেশসহ ভারতের জাতীয় রাজনীতি। উত্তর প্রদেশের বিজেপি শাসিত সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। সরব হয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও। সকালেই ওই তরুণীর বাড়িতে পৌঁছে যান তিনি।

আজ সকালে ওই তরুণীর বাড়িতে যান প্রিয়াঙ্কা গান্ধী

ওই তরুণীর বাড়িতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘বিজেপির সঙ্গে জড়িত তাই অভিযুক্তদের আড়াল করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, “রাজ্যে অপরাধীদের জন্য কোনো জায়গা নেই।” তবে উনি নিজেই রাজ্যের এ কী হাল বানিয়েছেন? আমার মনে হয়, এখানে নারীদের জন্য কোনো স্থান নেই। এ রাজ্য অপরাধীরা আইনকেও ভয় পায় না।’

পাশাপাশি ওই তরুণীর নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন করেন প্রিয়াঙ্কা। তিনি বলেন, ‘কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা গেল না?’

গত এক বছর ধরে ওই তরুণী ও তার পরিবারকে ভয়-হুমকির শিকার হতে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। রাজ্য প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘রোজ এই ধরনের ঘটনা হচ্ছে। প্রশাসনের কিছু করা উচিত।’

প্রসঙ্গত, ধর্ষণের মামলার শুনানির জন্য আদালতে যাওয়ার পথে আক্রান্ত হন উন্নাওয়ের ২৩ বছর বয়সী ওই তরুণী। মৃত্যুর আগে পুলিশকে তিনি জানিয়েছিলেন, পরিচিত শিবম, শুভম ত্রিবেদীসহ পাঁচজন তাকে বাধা দেয়।

তবে ওই হুমকি পাত্তা না দেওয়ায় মারধর করা হয় নির্যাতিতাকে। ছুরি আঘাতের পাশাপাশি গায়ে কেরোসিন ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কোনো মতে পালিয়ে পুলিশকে ফোন করেন ওই তরুণী। এরপর এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাকে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। গতকাল রাতে তার মৃত্যু হয়।