আন্তর্জাতিক

ভারতীয় সামরিক সম্মাননা পেলেন সেই অভিনন্দন: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাকিস্তানিদের উপহাস

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে হামলা করতে গিয়ে আটক হওয়া ভারতের বৈমানিক অভিনন্দন বর্তমানকে ভারতীয় তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক সম্মাননা বীরচক্র দেয়া হয়েছে।

সোমবার রাজধানী নয়াদিল্লিতে প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন রাষ্ট্রপতি ভবনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই পুরস্কার দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে গ্রুপ ক্যাপ্টেন অভিনন্দন বর্তমানকে বীরচক্রের ব্যাজ পরিয়ে দেন প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও উপস্থিত ছিলেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ভাষ্য অনুসারে, ২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানের সাথে সংঘর্ষে এক পাকিস্তানি এফ-১৬ বিমান গুলি করে ধ্বংসের জন্য তাকে এই সম্মাননা দেয়া হচ্ছে।

এর আগে ২০১৯ সালের আগস্টে অভিনন্দনকে বীরচক্র সম্মাননা দেয়ার ঘোষণা করা হয়।

এদিকে অভিনন্দন বর্তমানকে বীরচক্র পুরস্কারে ভূষিত করায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে উপহাস করছেন পাকিস্তানি নেটিজেনরা।

পাকিস্তানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য শেরি রহমান অভিনন্দনের বীরচক্র পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানের ভিডিওযুক্ত করে টুইট করেন, 'একি সত্যি? পাকিস্তানি নিরাপত্তা হেফাজতে চা পানের জন্য এই পুরস্কার?'

রাজা জুনায়েদ নামের এক নেটিজেন টুইট করেন, 'আমি জানতাম না যে ভারতে সেই সামরিক কর্মকর্তারা উচ্চ সামরিক পুরস্কার পায় যারা শত্রুদেশের কাছে আত্মসমর্পণ করে চমৎকার চা পান করেন।'

আসাদ সুলতান নামের অপর একজন বিদ্রুপ করে টুইট করেন, 'অভিনন্দন যিনি তার মিশনে ব্যর্থ হয়েছেন, ধরা পরেছেন এবং পাকিস্তান তাকে ফেরত পাঠিয়েছে।
ভারতীয় সরকার : তুমি আমাদের নায়ক! যদিও তুমি তা জানো না।'

সাংবাদিক তাহির ইমরান টুইট করেন, 'বাহ, এটি ইতিহাস তৈরি হয়েছে। প্রথম পুরস্কার 'কাল্পনিক যুদ্ধে অর্জনের' জন্য। এরপর কী? পাবজি গেমের খেলোয়াররা বীরচক্র পাবে?'

২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে অভিযানে আসেন তৎকালীন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। কিন্তু পাকিস্তানি বিমানের গুলিতে তার মিগ-২১ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয় এবং তিনি প্যারাস্যুটের সাহায্যে জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হন। পাকিস্তানি ভূমিতে অবতরণের পর তিনি জনতার হাতে আটক হন। পরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে জনতার কাছ থেকে নিয়ে নিজেদের নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়।

পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর হাতে আটক থাকার সময় তাকে জিজ্ঞেসাবাদের একটি ভিডিও রেকর্ড প্রকাশ করা হয়। ভিডিওতে তিনি পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন।

ওই ভিডিওতে চা পানের সময় অভিনন্দনের প্রতি প্রশ্নকর্তা মন্তব্য করেন, 'আশা করি, আপনি চা পছন্দ করেছেন'। এর প্রতিক্রিয়ায় অভিনন্দন বলেন, 'এই চা চমৎকার।' (দ্য টি ইজ ফ্যানটাস্টিক)

পরে দীর্ঘদিনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে 'দ্য টি ইজ ফ্যানটাস্টিক' মিম ভাইরাল থাকে।

অভিনন্দন আটক হওয়ার পর তার মুক্তির বিষয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনীতিক আলোচনা শুরু হয়।

আটকের তিনদিন পর ১ মার্চ, সীমান্তে দুই দেশের উত্তেজনা প্রশমন ও 'শান্তি প্রতিষ্ঠার ইঙ্গিত' হিসেবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নির্দেশে অভিনন্দনকে মুক্তি দিয়ে ভারতে পাঠানো হয়।   এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/আই

[এলএ বাংলাটাইমসের সব নিউজ আরও সহজভাবে পেতে ‘প্লে-স্টোর’ অথবা ‘আই স্টোর’ থেকে ডাউনলোড করুন আমাদের মোবাইল এপ।]