তুরস্কে
সম্প্রতি এক সেমিনারে অংশ
নেন প্রায় ৬০ জন
মুসলিম নেতা৷ দুদিনের অনুষ্ঠান
শেষে একটি ‘ডিক্লারেশন' প্রকাশিত
হয়৷ তাতে ২০৫০ সালের
মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন বন্ধ
করতে শিল্পোন্নত ও তেল উৎপাদনকারী
দেশের প্রতি আহ্বান জানানো
হয়েছে৷ এছাড়া বিশ্বের সকল
মুসলমানদের প্রতিও যে যার
অবস্থান থেকে জলবায়ু পরিবর্তন
মোকাবিলায় কাজ করার আহ্বান
জানানো হয়েছে৷ এক্ষেত্রে মহানবীর
(সাঃ) পথ অনুসরণ করার
কথাও বলা হয়েছে ঐ
ঘোষণাপত্রে৷
সেমিনারে
অংশ নেয়া কেনিয়ার মোহাম্মদ
আদৌ আশা করছেন, এই
ঘোষণাপত্র মুসলিম বিশ্ব, বিশেষ
করে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোকে
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ভূমিকা রাখতে উৎসাহিত
করবে৷
সেমিনারের
আয়োজকরা বলছেন তাদের এই
ডিক্লারেশনের সঙ্গে পোপের বক্তব্যের
‘মিল' রয়েছে৷ প্রকাশিত এক
‘এনসিক্লিকল'-এ পোপ বলেন,
দরিদ্র দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য
খুব বেশি দায়ী না
হলেও তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত
হচ্ছে৷ তাই ধনী দেশগুলোর
উচিত গরিব দেশগুলোকে সহায়তা
করা। ধর্মীয়
গ্রন্থে পরিবেশের কথা
ঈশ্বরের
সৃষ্টিকে রক্ষা
বাইবেলের
প্রথম বই ‘জেনেসিস’এ
বলা আছে, ঈশ্বর আদম
আর ঈভকে ‘গার্ডেন অফ
ইডেন’ অর্থাৎ ‘ঈশ্বরের বাগান’ বলে যেটা
পরিচিত, সেখানে পাঠিয়ে বাগানের
রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন৷
শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে
ইকোসিস্টেমকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে
ধনী দেশের নাগরিকদের জীবনযাপনে
পরিবর্তন ও জ্বালানি ব্যবহারে
সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান
পোপ৷ উল্লেখ্য, এনসিক্লিকল হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট
বিষয়ে পোপের দেয়া নির্দেশনা,
যা ক্যাথলিক শিক্ষাদান কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷
ইন্দোনশিয়া,
উগান্ডা, লেবানন ও বসনিয়া
সহ বিশটি দেশের প্রতিনিধি
সেমিনারে অংশ নেন৷ তবে
সেখানে ছিলেন না তুরস্কের
মতো কয়েকটি প্রভাবশালী ইসলামি
রাষ্ট্রের কোনো প্রতিনিধি৷
চলতি বছরের শেষে প্যারিসে
জাতিসংঘের আয়োজনে জলবায়ু পরিবর্তন
বিষয়ক একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত
হবে৷ পরিবেশবাদীরা চান ঐ সম্মেলনের
চুক্তিতে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন পুরোপরি
বন্ধের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হোক৷
কিন্তু তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো
এর বিরুদ্ধে৷ গত বছরের জলবায়ু
সম্মেলনে উপস্থিত সৌদি আরবের একজন
প্রতিনিধি বার্তা সংস্থা এপি-কে বলেছিলেন, অদূর
ভবিষ্যতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধের আশা বাস্তবসম্মত
নয়৷ কারণ উন্নত দেশগুলোতে
জ্বালানির চাহিদা দ্রুতহারে বৃদ্ধি
পাচ্ছে৷ এ প্রসঙ্গে তুরস্কের
সম্মেলনে উপস্থিত বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক
বিশেষজ্ঞ সালিমুল হক বলেন, আরব
বিশ্ব এখনও পর্যন্ত জলবায়ু
পরিবর্তনের বিষয়টি ততটা গুরুত্ব
দিয়ে ভাবছে না৷ তবে
সৌদি আরবের মতো দেশগুলোর
এ ধরনের মনোভাব পরিবর্তনের
চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন
তিনি৷মাস দুয়েক আগে জলবায়ু
পরিবর্তন নিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন
পোপ ফ্রান্সিস৷ এবার বিশটি দেশের
মুসলিম পণ্ডিত ও পরিবেশবাদীরা
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার আহ্বান জানালেন৷