গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য জাতিসংঘের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র বাধা দিলে তা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেছেন, যতক্ষণ যুক্তরাষ্ট্র ‘জায়নবাদী শাসকের (ইসরায়েল) অপরাধ ও যুদ্ধের ধারাবাহিকতাকে সমর্থন করবে... ততক্ষণ অঞ্চলের পরিস্থিতিতে একটি অনিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের সম্ভাবনা রয়েছে।’
নিউজ উইকের প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৩ জন পক্ষে ভোট দেয়। যুক্তরাজ্য প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল।
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি পেশ করেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। প্রস্তাবে অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতি ও সমস্ত জিম্মি মুক্তির আহ্বান জানানো হয়েছিল।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির সময় জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। তবে ১ ডিসেম্বর ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে অভিযোগ করে যুদ্ধবিরতি শেষ করে ইসরায়েল।
তবে আমির-আব্দুল্লাহিয়ান দাবিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ও বলেছেন, ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সমর্থন থাকায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
ইরানি সমর্থক যোদ্ধারা এই অঞ্চলে মার্কিন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। ফলে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন ৭ অক্টোবর হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলার পর যে সংঘাত শুরু হয়েছে তা আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে। কারণ হামাসকে সামরিক ও নৈতিক সমর্থন দেয় ইরান। সেইসঙ্গে তেহরান-সমর্থিত যোদ্ধা গোষ্ঠীদের অন্যান্য অংশ মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে কাজ করে।
আমির-আব্দুল্লাহিয়ান জাতিসংঘ প্রধান গুতেরেসের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন। তিনি গাজা ও মিসরের মধ্যে রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং অবিলম্বে খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান যাতে গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া যায়।
কারণ গাজায় মানবিক পরিস্থিতির ক্রমবর্ধমান অবনতিতে উদ্বেগ বাড়ছে। ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি (আইআরসি) বলেছে, এমনকি এখানে স্বাস্থ্য পরিষেবাও সীমিত। তারপর বোমাবর্ষণ, গোলাবর্ষণ ও চলাচলের বিধিনিষেধের কারণে মানুষ তাদের জীবন বাঁচানোর প্রাথমিক চিকিৎসাও পাচ্ছেনা।
আইআরসি একটি ইমেলে নিউজউইককে বলেছে, ‘মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে যুদ্ধ বন্ধ করাই গাজার বেসামরিক নাগরিকদের সহায়তা ও সুরক্ষাসহ সকল চাহিদা মেটানোর একমাত্র উপায়।’
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, জাতিসংঘে ভোটের পর ইসরায়েলি বিমান গাজা শহরের ওপর বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। তারা ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ অঞ্চলে সরে যেতেও বলেছে।
৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর কমপক্ষে ১ হজার ২০০ জন নিহত হয়। অপরদিকে ইসরায়েলি বোমা হামলায় গাজায় ১৭ হাজার ৪০০ জনের বেশ মানুষ নিহত হয়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস