আন্তর্জাতিক

আশার আলো দেখাচ্ছেন জেলেনস্কি

সামরিক সাফল্যের অভাব ও পশ্চিমা বিশ্বের সহায়তা নিয়ে অনিশ্চয়তার উল্লেখ করেও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এখনো ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছেন। তবে যুদ্ধের অবসান সম্পর্কে তিনিও কিছু বলতে পারছেন না। প্রায় দুই বছর ধরে রাশিয়ার হামলার মুখে ইউক্রেন যে সমস্যার মুখে পড়েছে, প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি এক সংবাদ সম্মেলনে তার বিভিন্ন দিক তুলে ধরলেন। তিনি স্বীকার করলেন যে, যুদ্ধ বন্ধ হবার কোনো লক্ষণ এই মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে না। রুশ হানাদার বাহিনীকে দেশছাড়া করতে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী কনস্ক্রিপশনের মাধ্যমে আরো পাঁচ লাখ সৈন্য নিয়োগের অনুরোধ করলেও জেলেনস্কি আপাতত সেই পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে তেমন সাফল্যের মুখ না দেখলেও ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রুশ বাহিনীকে আর অন্তত অগ্রসর হতে দেয়নি। পশ্চিমা বিশ্ব থেকে বিশাল সামরিক ও আর্থিক সহায়তা সেই প্রতিরোধ অনেকটাই সম্ভব করেছে বলে সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। কিন্তু অ্যামেরিকা ও ইউরোপ আরো কতকাল এমন সহায়তা দিয়ে যাবে, সে বিষয়ে সংশয় বাড়ছে। জেলেনস্কি স্বয়ং ওয়াশিংটনে গিয়ে ৬,০০০ কোটি ডলার অঙ্কের প্রস্তাবিত মার্কিন সহায়তা সম্পর্কে সংসদের আপত্তি দূর করতে পারেননি। হাঙ্গেরির আপত্তির কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রায় ৫,০০০ কোটি ইউরো অংকের সহায়তাও আপাতত আটকে রয়েছে। জেলেনস্কি হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ওরবানের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁর আপত্তি দূর করার চেষ্টা করতে চান। মার্কিন কংগ্রেসও শেষ পর্যন্ত আপত্তি তুলে নেবে বলে তিনি আশা করছেন। সামরিক সাফল্যে ও বিদেশের সমর্থনের অভাবের কারণে জেলেনস্কির নেতৃত্ব নিয়েও ইউক্রেনে প্রশ্ন উঠছে। জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী তাঁর প্রতি জনগণের সমর্থন কমে চলেছে। এক বছর আগে প্রায় ৮৪ শতাংশ জেলেনস্কির প্রতি আস্থা দেখালেও বর্তমানে সেই মাত্রা ৬২ শতাংশে কমে এসেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন মঙ্গলবারই ইউক্রেন যুদ্ধে জয়ের অঙ্গীকার করেন। প্রতিরক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি রাশিয়ার সামরিক অভিযানের প্রতি সমাজের সমর্থনেরও দাবি করেন। আগামী মার্চ মাসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সেই সমর্থনের প্রতিফলন সম্পর্কেও তিনি নিশ্চিত। পুটিন পশ্চিমা বিশ্বকে বর্তমান সংকটের জন্য আবার দায়ী করেন। রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বেড়ে চলা ক্ষমতা ও প্রতিরক্ষা খাতে উৎপাদন বৃদ্ধি সম্পর্কে তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তবে তিনি আরো ড্রোন, আরো উন্নত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এবং আধুনিক স্যাটেলাইট যোগাযোগ প্রণালীর প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করেন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু আগামী বছর আরো আড়াই লাখ স্বেচ্ছাসেবী সৈন্য নিয়োগের ঘোষণা করেন।

এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস