আন্তর্জাতিক

লস এঞ্জেলেস প্রবাসী কালীপ্রদীপ চৌধুরী সিলেটে প্রতিষ্ঠা করছেন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

লস এঞ্জেলেস প্রবাসী বাংলাদেশীদের গর্ব, বিশ্বমানের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কেপিসি গ্রুপের চেয়ারম্যান ড.কালীপ্রদীপ চৌধুরী এবার নিজ বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করছেন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

ড. কালীপ্রদীপ চৌধুরী এখন বিশ্বের সেরা ধনাঢ্য ব্যক্তিদের একজন। বিশ্বের প্রায় ৮টি দেশে রয়েছে তাঁর ২৫ ধরণের ব্যবসা। ক্যালিফোর্নিয়ায় আছে সাড়ে ৩কি.মি. আয়তনের বিশাল বাড়ি। ভারতে আছে ১৬টি চা-বাগান, যার মধ্যে আছে ৫০০০০ একরের আয়তন বিশিষ্ট চা বাগান। ইউক্রেনে আছে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতে আছে ১০০০ শয্যা বিশিষ্ট ২৬টি বিশ্বমানের মেডিকেল কলেজ।

এর বাইরে আছে বিশ্বের মোড়লদের সাথে সখ্যতা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, সাবেক প্রেসিডেন্ট রিগ্যান, জর্জ বুশ, সিনিয়র বুশ, হিলারি ক্লিনটন এরা তার নিয়মিত ডিনার সঙ্গী। তাঁর সম্মানে যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫কি.মি দীর্ঘ সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।

লস এঞ্জেলেস প্রবাসী ড. কালীপ্রদীপ  দত্ত চৌধুরীর জন্ম সিলেটের ঢাকাদক্ষিণ এলাকার দত্তরাইল গ্রামে। জমিদার পরিবারের সন্তান কালীপ্রদীপ  দত্তের ছেলেবেলা কেটেছে এখানেই। বিশ্বসেরা ব্যক্তিদের একজন হয়েও তিনি ভুলেননি স্বদেশকে। দেশকে নিয়ে তার রয়েছে অনেক স্বপ্ন। বাস্তবায়নও করেছেন অনেগুলো।

খোদ তার নিজ গ্রামেই আছে ৩টি কলেজ, এর মধ্যে একটিতে আছে ৫টি বিষয়ে অনার্স কোর্স।

এবার কালীপ্রদীপ  অন্যভাবে স্বপ্ন দেখছেন। সারাদেশে আছে একটিমাত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। সিদ্ধান্ত নিলেন নিজ গ্রামে পৈতৃক সম্পত্তির ৩৫ একর জায়গা জুড়ে নির্মাণ করবেন বিশ্বমানের একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু প্রথমদিকে তার উদ্যোগে জাতীয় এবং স্থানীয়ভাবে বাধা তৈরী হয়েছিল।

জাতীয় শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা চাইছিলেন এটি ঢাকাদক্ষিণে না হয়ে রাজধানী ঢাকায় হোক। আর স্থানীয় ভূমিখেকোরা নিজেদের স্বার্থ বিনষ্ট হবে ভেবে এর বিরোধিতা করেছিলেন।

অবস্থার পরিবর্তন হল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অর্থমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর সহোদর সাবেক রাষ্ট্রদূত একেএম আব্দুল মুবিন দায়িত্ব নিয়েছেন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়টি তৈরীর।

 যেকোন মূল্যে জমিদার বাড়ির সম্পত্তির উপরই নির্মাণ হবে বিশ্বমানের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। দেশ-বিদেশ থেকে রোগীরা চিকিৎসার জন্য ছুটে আসবেন এখানে। প্রপিতামহ কালিকাপ্রসন্ন দত্ত চৌধুরীর স্বপ্ন বড় পরিসরে বাস্তবায়িত হবে এই স্বপ্ন দেখেন ড. কালীপ্রদীপ ও সহোদরা তৃঞ্চা দত্ত।

এদিকে রাজধানী ঢাকায় বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম টাওয়ার নির্মাণের কাজ শুরু করছেন ড. কালীপ্রদীপ ।  রাজধানী ঢাকার পূর্বাচল এলাকায় ১৪২ তলা বিল্ডিং নির্মাণ করছেন তিনি। কালীপ্রদীপ দত্ত চৌধুরী টাওয়ার, দত্তরাইল (কেপিসি টাওয়ার) নামের এই টাওয়ারটি আগামী ১২ই জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করার কথা। এর পরই শুরু হবে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ। মেডিকেল বাস্তবায়ন সহ অন্যান্য কাজে  এলাকার সকলের সহযোগিতা চান সিলেটের এককালের দাপটে জমিদার পরিবারের সন্তান ড. কালীপ্রদীপ  চৌধুরী।



কেপিসি চৌধুরী নামে পরিচিত কালীপ্রদীপ চৌধুরী বলেন, “আমাকে নিয়ে এলাকার মানুষ গর্ব করবে আমি এটা চাই না। আমি দেশ বিদেশে আমার ঢাকাদক্ষিণ নিয়ে, আমার দেশ নিয়ে গর্ব করি। একটা সময় আমাদের দেশকে বলা হত বাস্কেট কেস। কিন্তু আজ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের রিজার্ভ এতই ভালো যে, বিদেশী ডাকাতদের নজর পড়েছে। আমাদের যুব সমাজ এখন অনেক কর্মঠ। এই দেশকে আমি অনেক কিছু দিতে চাই। তাইতো ছুটে এসেছি প্রিয় জন্মভূমিতে।এই মাটির প্রতি আমার কর্তব্য পালন করতে চাই।”

কালীপ্রদীপ চৌধুরীর ঘনিষ্টজন বলে পরিচিত প্রবাসী গোলাম রব্বানী খান বলেন, “আমরা মাঝে মাঝে একথা চিন্তা করে বিস্মিত হই যে, তিনি এককালে আমাদের গ্রামের স্কুলে লেখাপড়া করেছেন, এই মাঠেই তিনি তার শৈশবের দূরন্তপনায় মেতেছেন। এখন তিনি বিশ্বের সেরা সফল মানুষদের একজন, কিন্তু তার মধ্যে কোন অহমিকা নেই। আছে দেশের জন্য টান। সত্যি বলতে কি, তিনি একেবারে শূন্য থেকে সব শুরু করেছেন। নিজ যোগ্যতা দিয়েই তিনি আজকের এই অবস্থানে আসতে পেরেছেন। নিঃসন্দেহে তিনি সকলের জন্য রোল মডেল হতে পারেন।”

এদিকে গত ১০জুন শুক্রবার ঢাকাদক্ষিণে জমিদার বাড়িতে আয়োজিত অনুষ্টানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত অবৈধভাবে দখলকৃত সকল ভূমি মুক্ত করে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যথায় যেকোনভাবে তা দখলমুক্ত করা হবে বলে তিনি হুশিয়ারি দেন।  তিনি বলেন, ঢাকাদক্ষিণের দত্ত চৌধুরী পরিবারের অবৈধভাবে গ্রাস করা সকল সম্পত্তি অবিলম্বে ছেড়ে দিতে হবে, নইলে সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি