আন্তর্জাতিক

স্কুলে মোবাইল নিষেধাজ্ঞা কার্যকর: নেদারল্যান্ডে ফোকাস ও ফলাফলে বৃদ্ধি

স্মার্টফোন নিষিদ্ধ করায় নেদারল্যান্ডসের স্কুলে পড়াশোনার পরিবেশ উন্নত হয়েছে। সরকারি এক গবেষণায় এমনটাই উঠে এসেছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ক্লাসে ফোন নিষিদ্ধের জাতীয় নির্দেশনা জারির পর বেশিরভাগ স্কুলই সেটি মেনে নিয়েছে। এখন দেশটির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সেকেন্ডারি স্কুলে শিক্ষার্থীদের ফোন বাসায় রেখে আসতে বলা হয় বা লকারে রাখতে হয়। প্রতি পাঁচটি স্কুলের একটিতে ক্লাস শুরুর আগে ফোন জমা দিতে হয়।
নেদারল্যান্ডসের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সেকেন্ডারি স্কুলে শিক্ষার্থীদের ফোন বাসায় রেখে আসতে বলা হয় বা লকারে রাখতে হয়। ছবি: শাটারস্টক গবেষকরা ৩১৭টি সেকেন্ডারি ও ৩১৩টি প্রাইমারি স্কুলের প্রধানদের ওপর জরিপ চালান। পাশাপাশি শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে ১২টি ফোকাস গ্রুপ আলোচনা করেন তারা। সেকেন্ডারি স্কুলগুলো জানিয়েছে, এখন শিক্ষার্থীরা ক্লাসে বেশি মনোযোগী হতে পারছে (৭৫ শতাংশ), সামাজিক পরিবেশও আগের চেয়ে ভালো হয়েছে (৫৯ শতাংশ), এবং কিছু স্কুল জানিয়েছে, ফলাফলেও উন্নতি হয়েছে (২৮ শতাংশ)।   গবেষক ড. আলেকজান্ডার ক্রেপেল বলেন, 'সবচেয়ে ভালো উন্নতি হয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যোগাযোগে। এখন আর কেউ লুকিয়ে কারও ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপে ছড়াতে পারে না—এটা একটা বড় সামাজিক নিরাপত্তা। আগের মতো ব্রেক টাইমে সবাই ফোনে ডুবে থাকে না, এখন কথা বলতে হয়। মাঝে মাঝে ঝগড়া হলেও শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলছে, এখন পরিবেশ অনেক ভালো।' নেদারল্যান্ডসে ক্লাসে মোবাইল নিষিদ্ধের বিষয়ে শুরুতে স্কুল, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তবে এখন সবাই বেশ সন্তুষ্ট, এমনটাই জানিয়েছেন ভিও-রাদ (মাধ্যমিক শিক্ষা কাউন্সিল) মুখপাত্র ফ্রেয়া সিক্সমা।   তিনি বলেন, 'শুরুতে অনেক প্রশ্ন ছিল—এটা কীভাবে কাজ করবে, কে মানবে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, সবাই আসলে খুশি।' গবেষণায় দেখা গেছে, বিশেষায়িত কিছু স্কুলে যদিও বিশেষ সহায়তার জন্য মাঝে মাঝে মোবাইল ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়, তবুও এসব স্কুলের অর্ধেকের বেশি জানিয়েছে—নিষেধাজ্ঞার ফলে ভালো প্রভাব পড়েছে। দেশটির প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি এডুকেশন মন্ত্রী মারিয়েলে পল বলেন, এই জাতীয় নির্দেশনা শ্রেণিকক্ষে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়তা করেছে। আগে কোনো শিক্ষক ব্যক্তিগতভাবে ফোন নিষিদ্ধ করতে চাইলে তা নিয়ে বিতর্ক হতো। বিশেষ করে নতুন শিক্ষকরা সেটি প্রয়োগ করতে হিমশিম খেতেন।   নেদারল্যান্ডসের পরিসংখ্যান সংস্থার তথ্যে বলা হয়েছে, দেশটির ৯৬ শতাংশ শিশু প্রতিদিন অনলাইনে থাকে, বেশিরভাগই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। গত মাসে সরকার অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়েছে, ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করতে এবং 'স্ক্রিন টাইম' কমিয়ে আনতে। একজন সংসদ সদস্য স্কুলে মোবাইল ফোন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধের প্রস্তাব দিয়েছেন।