ফিলিস্তিনপন্থী 'প্যালেস্টাইন অ্যাকশন' গ্রুপ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামা আরও ১৫০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে যুক্তরাজ্যের পুলিশ। শনিবার (৯ আগস্ট) লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছে। পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, পার্লামেন্ট স্কোয়ারে 'প্যালেস্টাইন অ্যাকশন'-এর প্রতি সমর্থন প্রকাশকারী প্ল্যাকার্ড নেড়ে জনতা জড়ো হওয়ার পর অফিসাররা তাদের গ্রেপ্তার করে।
বিক্ষোভকারীরা কেউ কেউ কালো ও সাদা ফিলিস্তিনি স্কার্ফ পরেছিলেন। তারা 'তোমাদের ধিক্কার' এবং 'গাজা থেকে হাত সরিয়ে নিন' এবং 'আমি গণহত্যার বিরোধিতা করি' স্লোগান দিচ্ছিলেন।
ঘটনাস্থল থেকে রয়টার্সের তোলা ভিডিওতে দেখা গেছে, তারা 'আমি ফিলিস্তিনের পদক্ষেপকে সমর্থন করি' লেখা প্ল্যাকার্ড ধরেছিলেন। গত জুলাই মাসে ব্রিটিশ সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন নিষিদ্ধ করেন। দাবি করা হয়, এর কিছু সদস্য ইসরায়েলের প্রতি ব্রিটেনের সমর্থনের প্রতিবাদে রয়্যাল এয়ার ফোর্স ঘাঁটিতে প্রবেশ করে এবং বিমানে স্প্রে দিয়ে রঙ করে দেন। এরপর আরোপিত এই নিষেধাজ্ঞার ফলে এই গ্রুপের সদস্য হওয়া অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এর সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের কারাদণ্ড। প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা হুদা আম্মোরি গত সপ্তাহে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আইনি চ্যালেঞ্জ দায়েরের দরপত্রে জয়লাভ করেছেন। এদিকে, গ্রুপটিকে নিষিদ্ধ করার পর ব্রিটিশ সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের 'বিরক্তিকর অপব্যবহার' করেছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক। তিনি এ নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করে ব্রিটিশ সরকারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং মতপ্রকাশ ও প্রতিবাদের স্বাধীনতা সীমিতকারী আইনটি সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছেন। ভলকার তুর্ক সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী আইন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে বিস্তৃতভাবে সংজ্ঞায়িত করে এবং সম্পত্তির গুরুতর ক্ষতিকে এতে অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কেবল মৃত্যু বা গুরুতর আঘাত বা জিম্মি করার উদ্দেশ্যে করা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। এটি সন্ত্রাসবাদের গুরুত্ব এবং প্রভাবকে অপব্যবহার করে স্পষ্ট সীমানা ছাড়িয়ে প্রসারিত করছে।' তিনি আরও বলেন, 'সিদ্ধান্তটি অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হচ্ছে। এটি অনেক মানুষের অধিকার সীমিত করবে...যারা নিজেরা কোনো অন্তর্নিহিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত নন বরং তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং সংঘবদ্ধ হওয়ার অধিকার প্রয়োগ করেছেন।' এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস