আন্তর্জাতিক

‘ডিজিজ এক্স’ হতে পারে মানবজাতির জন্য ভয়াবহ : ডব্লিউএইচও

ইবোলা, জিকা আর সার্সের হুমকিতে এমনিতেই তটস্থ হয়ে আছে মানুষ। এর সাথে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পৃথিবীব্যাপী মহামারী ঘটাতে পারে এমন অসুখের তালিকায় যোগ করল নতুন রহস্যময় অসুখ 'ডিজিজ এক্স'।যেকোনো সময় মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন কয়েকটি অসুখের একটি তালিকা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে তৈরি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

মহামারীর আশঙ্কা খতিয়ে দেখতে এই নিয়ে তৃতীয়বার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ও সংক্রামক অসুখ বিশেষজ্ঞদের কমিটির সাথে বৈঠকে বসল। এবারই প্রথম ডিজিজ এক্স তাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ডিজিজ এক্স কোনও চিহ্নিত জীবানু বা অসুখ নয়। এটাকে বিজ্ঞানীরা বলছেন 'অজানা পরিচিত' অসুখ যা বিভিন্ন জীবাণুর মিউটেশন বা শংকরের মাধ্যমে তৈরি হতে পারে। স্প্যানিশ ফ্লু ও এইচআইভি এরকম মিউটেশনের মাধ্যমে তৈরি ভাইরাস।

আবার 'ডিজিজ এক্স' কেউ সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য তৈরি করতে পারে। অথবা এটি নিছক দুর্ঘটনার ফলেও ল্যাবে সৃষ্টি হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, 'একটা অজানা রোগে পৃথিবীজুড়ে ব্যাপক মহামারী দেখা দিতে পারে বলে আমরা অনুমান করছি এটা বুঝাতেই 'ডিজিজ এক্স' সম্ভাব্য মহামারীর তালিকায় যোগ করা হয়েছে।'

এতদিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার 'ব্লুপ্রিন্ট প্রায়োরিটি ডিজিজেস'-এর তালিকায় মহামারী ঘটাতে সক্ষম এমন আটটি অসুখের কথা উল্লেখ ছিল। এই অসুখগুলোর কোনো কার্যকরী চিকিৎসা এখনও আবিস্কার করা যায়নি। সংক্রামক রোগের আক্রমণ যে সবসময় অনুমান করা যায়না তা স্বীকার করতেই এই তালিকাতে এবার সংস্থাটির বিজ্ঞানীরা 'ডিজিজ এক্স' যোগ করলেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, মানুষকে আতঙ্কিত করার জন্য তারা ডিজিজ এক্স এই তালিকায় যুক্ত করেননি। জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা যেন শুধু পরিচিত অসুখ নয়, বরং সব রকম হুমকি মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত থাকেন তা নিশ্চিত করতে এই অসুখটিকে তালিকাভুক্ত করেছি।

সংস্থাটি বলছে, 'পৃথিবী এগিয়ে চলার সাথে সাথে মানুষ ও পশু আরও বেশি একে অপরের সংস্পর্শে আসছে। এতে নতুন অসুখ দেখা দেয়া ও তা বিস্তৃত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বাণিজ্যের কারণে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও বাড়ছে।'

কোনো অসুখ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকলে তা শুরুতে বুঝা যায় না। যেমন, ২০১৫-২০১৬ সালে দক্ষিণ আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে যখন জিকার তাণ্ডব শুরু হয় তখন এটির ধ্বংস-ক্ষমতা আন্দাজ করা যায়নি।

আবার, এই অসুখটির সম্ভাব্য উৎস হতে পারে কোনো রাষ্ট্র বা সন্ত্রাসী সংগঠন। বিভিন্ন দেশ যুদ্ধের সময় রাসায়নিক জীবাণু অস্ত্র ব্যবহার করে, যদিও এমন অস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ।

জিন এডিটিং প্রযুক্তি ও বর্তমান সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করে এখন জীবাণু অস্ত্র তৈরি এখন এগের চেয়ে সহজ। কিন্তু এটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে কোল্ড ওয়ারের সময়।

সিরিয়া বিদ্রোহীদের উপর রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে, গত সপ্তাহেই ব্রিটেনের জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করছিল এমন এক রাশিয়ান নাগরিক ও তার মেয়েকে একটি অজানা 'নার্ভ এজেন্ট (স্নায়ু ধ্বংস করার বিষ)' দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।

মানুষের তৈরি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করা মানব শরীরের জন্য কঠিন হবে, কারন এটির কোনো প্রাকৃতিক ব্যবস্থা নেই।


এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি