লন্ডন

কেমন আছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা ব্রিটেনে

ঘন ঘন কলেজ বন্ধ হয়ে যাওয়া, কাজের অনুমতি না থাকা এবং কলেজ মালিকদের সীমাহীন মুনাফাখোরি প্রবনতার কারণে ব্রিটেনে লেখাপড়া করতে আসা বাংলাদেশি ছাত্ররা চরম দুর্দশায় দিনাতিপাত করছেন। এমন দুর্দিন অতীতে আর দেখা যায়নি। ব্রিটিশ সরকারের ইমিগ্রেশনের কড়াকড়ি ও ধরপাকড়ের কারণে এবং নিয়ম বর্হিভূত কলেজগুলোর ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নেয়ায় ব্রিটেনে পড়তে আসা ছাত্রদের এমন দুর্দশায় পড়তে হচ্ছে।

জানা গেছে, যেসব ছাত্র ইমিগ্রেশন ও বর্ডার এজিন্সের সব শর্ত যথাযথভাবে মেনে লন্ডনসহ বিভিন্ন শহরে অবস্থান করছেন তারা টিউশন ফিসহ পড়াশুনার আনুষঙ্গিক খরচ যোগানোর ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকার শিকার হচ্ছেন। এছাড়া ব্রিটিশ সরকারের নানারকম বৈষম্যমূলক আচরণের বলি হচ্ছেন তারা। ফলে সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে ব্রিটেনে পড়তে আসা বাংলাদেশি ছাত্রের সংখ্যা নেমে এসেছে প্রায় শূন্যের কোটায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে ব্রিটেনে যেসব বাংলাদেশি ছাত্র অবস্থান করছেন তাদের অনেকেই আসার আগে যেসব সুযোগ-সুবিধার কথা শুনে এসেছিলেন তার একেবারে উল্টোটাই ঘটছে। এখানে এসে এরকম বাস্তব চিত্র দেখতে পেয়ে স্বপ্নভঙ্গ হচ্ছে ছাত্রদের। কয়েকদিনের মধ্যেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তারা।

ব্রিটেনে পড়তে আসা কয়েকজন ছাত্র জানান, তাদের অনেকে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়ার আশায় ব্রিটেনে এসেছিলেন। কিন্তু কলেজ বন্ধ হওয়ায় তাদের সে আশা ও স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে। এখন তারা চরম হতাশায় দিনযাপন করছেন। অনেকে ব্রিটেনে অবৈধ হিসেবে গণ্য হচ্ছেন। তাই বিকল্প পথ হিসেবে তারা পাড়ি দিচ্ছেন স্পেন ও ফ্রান্সে।
ব্রিটেনে পড়তে আসা রাসেল নামের একজন জানান, তিনি সিলেট এমসি কলেজ থেকে এমএ পাস করে স্টুডেন্ট ভিসায় ২০১০ সালে ব্রিটেনে এসেছিলেন উচ্চতর ডিগ্রি নিতে। তার স্বপ্ন ছিল উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে বড় একটা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করবেন। কয়েক বছর ভালোভাবে কলেজে পড়াশোনাও করেছেন। কিন্তু কয়েকদিন আগে হঠাৎ করেই তার কলেজটি বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরমভাবে ভেঙে পড়েছেন রাসেল।

সুমন নামের আরেক ছাত্রের সঙ্গে কথা হয়। তার স্বপ্ন ছিল বিদেশে এসে ভালোভাবে পড়ালেখা করার। কিন্তু আসার পর কয়েক মাসের মাথায় তার কলেজটিও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তার পড়ালেখার ইতি টানা ছাড়া কোনো পথ নেই। তাই চোরাই পথে স্পেন পাড়ি দেয়ার সব ধরনের চেষ্টা-তদবির করছেন তিনি।