লস এঞ্জেলেস

কংগ্রেসের পুরো নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারেন রিপাবলিকানরা


আগামী নভেম্বরে নির্বাচনকে নিয়ে দুঃসংবাদ শুধু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেই নয়, তাড়া করছে রিপাবলিকান পার্টিকেও। নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত বলে মনে করা হচ্ছে। হোয়াইট হাউসের দখল নিয়ে হিসাব–নিকাশ করা হলেও ডেমোক্র্যাট–সমর্থকদের অনেকটাই আত্মবিশ্বাস, কংগ্রেসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তাঁদের হাতে চলে আসছে। এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ধরাশায়ী হলে আমেরিকার রাজনীতিতে আবার নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হবে। সম্ভাব্য ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন জনমত জরিপে সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি আমেরিকার জনগণের এখনকার নেতিবাচক দৃষ্টি সাধারণ নির্বাচনের সর্বক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাটদের সুবিধা দেবে। অ্যারিজোনা, কলোরাডো, মেইন এবং নর্থ ক্যারোলাইনাতে বর্তমান জনমত জরিপে অনেকটাই নিশ্চিত, সিনেটে ডেমোক্রেটিক পার্টিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আসছে। 

অ্যালাবামায় ডেমোক্র্যাট সিনেটর ডাগ জোনস তাঁর পুনর্নির্বাচনে হেরে গেলেও সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন ডেমোক্র্যাট–সমর্থকেরা। মন্টানায় রিপাবলিকান সিনেটর স্টিভ ডাইনেস রাজ্যের ডেমোক্র্যাট গভর্নরের বিরুদ্ধে নির্বাচনে হেরে যেতে পারেন। আইওয়া ও জর্জিয়াতেও রিপাবলিকানদের যেসব আসন নিশ্চিত মনে করা হতো, এখন জনমত জরিপে তা সমান সমান দেখাচ্ছে।

ডেমোক্রেটিক পার্টির পক্ষ থেকে ব্যাপক অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাদের একটাই লক্ষ্য এখন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জন–উৎসাহ ধরে রাখা এবং ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া। ক্যানসাস, সাউথ ক্যারোলাইনা এবং কেন্টাকিতে ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ে এখনো রিপাবলিকান প্রার্থীদের ভিত্তি অনেক সবল। জনমত জরিপেও সেখানে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থীরা এগিয়ে আছেন। রিপাবলিকান পার্টির সিনেট নির্বাচনের প্রচারণা শিবিরের এক কর্মকর্তা রাজনৈতিক সংবাদমাধ্যম দ্য হিলকে বলেছেন, আমরা এখন বেশ খারাপ অবস্থায়ই আছি। যদি পরিস্থিতির নাটকীয় মোড় না নেয়, কলোরাডোতে সিনেটর কোরি গার্ডনার ও অ্যারিজোনাতে সিনেটর মার্থা ম্যাকসেলি তো হারছেনই। মেইন অঙ্গরাজ্যে সিনেটর সুজান কলিনস এবং নর্থ ক্যারোলাইনার সিনেটর টম টিলিসও রিপাবলিকান পার্টিকে সিনেট নির্বাচনে হারাতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।

রিপাবলিকান পার্টি থেকে অবশ্য প্রকাশ্যে বলা হচ্ছে, তারা এ বছরের নির্বাচনে আত্মরক্ষামূলক প্রচারণা করছে। ফলে, জনমত জরিপে না দেখালেও নভেম্বরের ফলাফল ততটা নাজুক হবে না। এবারের নির্বাচনে ২০ জন রিপাবলিকান সিনেটরকে পুনর্নির্বাচন মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কংগ্রেসের সিনেটে এখন ৫৩–৪৭ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রিপাবলিকান পার্টির। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ডেমোক্র্যাটদের চারটি আসন দখল করাই যথেষ্ট। নির্বাচনের আর তিন মাসের কিছু বেশি বাকি। এর মধ্যেই ডেমোক্র্যাট–সমর্থকেরা মনে করছেন, তাঁদের পক্ষে সিনেট দখল করা এবারে সহজই হয়ে উঠেছে।

আগামী তিন মাসে আমেরিকার রাজনৈতিক মাঠের কতটা পরিবর্তন আসবে, এ নিয়ে কেউ নিশ্চিত নয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি দ্বিতীয় দফা নির্বাচিত হতে না পারেন, তা যেমন ইতিহাস হয়ে থাকবে। তেমনি ক্ষমতায় থাকা রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্টের সময়ে কংগ্রেসের উভয় কক্ষের নিয়ন্ত্রণ হারানোটাও আরেকটি ইতিহাস হয়ে থাকবে। কংগ্রেসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হলেও পরের চার বছর ওয়াশিংটনের উত্তেজনা অন্য মাত্রা পাবে বলেই মনে করছেন মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

এলএ বাংলা টাইমস/এম/বিএইচ