লস এঞ্জেলেস

যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী নাসরিন প্রেমের টানে বাংলাদেশি দরিদ্র যুবককেই বিয়ে করছেন

দরিদ্র যুবক সাদ্দাম হোসেনকে বিয়ে করার জন্য সুদূর আমেরিকা থেকে আসেন তিনি। কিন্তু বিমানবন্দরে নামার পর নাসরিনের পরিবার বিরোধিতা করায় বিপাকে পড়েন পুলিশ কর্মকর্তারা। অবশেষে পুলিশই প্রেমিকের হাতে তুলে দেয় প্রেমিকাকে।

জানা যায়, মোবাইল ফোনে ভুল নম্বরে যোগাযোগের মাধ্যমে সিলেটের সম্ভ্রান্ত পরিবারের তরুণী হালিমা নাসরিন ও সিরাজগঞ্জের দরিদ্র পরিবারের যুবক সাদ্দাম হোসেনের পরিচয় হয়। ফোনে কথা বলতে বলতে একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। সিলেটে থাকাকালে পরিচয় হলেও তিন বছর আগে নার্সিং বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিতে আমেরিকায় যান নাসরিন। তবু থামেনি দুজনের প্রেমের সম্পর্ক। দুজনের সম্পর্ক নাসরিনের পরিবার জেনে গেলে বাদ সাধে তারা। কিন্তু সাদ্দামকে পেতে নাসরিন ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তিনি সাদ্দামকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। দীর্ঘ তিন বছর পর আমেরিকা থেকে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি বিমানে করে গতকাল সকালে শাহজালাল বিমানবন্দরে নামেন নাসরিন। তাঁকে রিসিভ করতে বিমানবন্দরে আসেন প্রেমিক সাদ্দাম হোসেন। তা ছাড়া নাসরিনের পরিবারও টের পেয়ে সিলেট থেকে বিমানবন্দরে ছুটে আসে।

নাসরিনের ভাই হেলাল তাকে অনুরোধ করতে থাকেন তাদের সঙ্গে সিলেটে যেতে। কিন্তু অনড় বোন বলেন, আমি সাবালিকা। আমার সিদ্ধান্ত, আমি যাকে ভালোবাসি, তাকে বিয়ে করবো। মেয়ের সিদ্ধান্ত ও পরিবারের অনুরোধে বিব্রতবোধ করতে থাকেন দায়িত্বরত এএসপি আসমা আরা জাহান। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। এরপর ওই তরুণীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে প্রেমিকের সঙ্গে যেতে দেওয়ার পরামর্শ দেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরামর্শ পেয়ে কর্তব্যরত অফিসার প্রেমিক যুবকের সঙ্গে ওই তরুণীকে যেতে দেন।

এপিবিএনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন কালের কণ্ঠকে জানান, নাসরিনকে নিতে তার পরিবার পীড়াপীড়ি করলে নাসরিন যেতে রাজি হননি। সাফ জানিয়ে দেন তিনি সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গেই যাবেন। এ অবস্থায় তাঁর পরিবার পুলিশের সহায়তা চায়। পরে নাসরিনকে এপিবিএনের কার্যালয়ে নিয়ে যান আলমগীর হোসেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে নাসরিনকে সাদ্দামের কাছে দেওয়া হয়।

সাদ্দাম হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, প্রায় তিন বছর ধরে আমরা একে অন্যকে ভালোবাসি। আমরা দুজন আজ (গতকাল) বিয়ে করব। আমার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জে বিয়ের আয়োজন চলছে। নাসরিন বলেন, আমি ভালোবাসার টানে দেশে এসেছি। সাদ্দামের সঙ্গে যেতে দেওয়ার জন্য আমি আর্মড পুলিশকে ধন্যবাদ।

প্রেমিকা হালিমা নাসরিন বলেন, আমি আমেরিকার গ্রিনকার্ডধারী নাগরিক। আমি আমার ভালোবাসার টানে দেশে এসেছি। সাদ্দামের সঙ্গে যেতে দেওয়ার জন্য আমি আর্মড পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই।