লস এঞ্জেলেস

আপনাদের কাছে দোয়ার আবেদন

লস এঞ্জেলেস প্রবাসী কমিউনিটিবাসী, আসসালামু আলাইকুম। কখনো ভাবিনি, এমন একটি সংবাদ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে হবে। অত্যন্ত দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের জানাচ্ছি যে, আজ আমি ছাড়া আমার পরিবারের প্রায় সবাই কোভিড-১৯ পজেটিভ। প্রথমে আমার বড় ভাই, এরপর আব্বা, আম্মা এবং সর্বশেষ ভাবী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বড় ভাই বাড়িতেই আইসোলেশনে থেকে আল্লাহর রহমতে অনেকটাই সেরে উঠেছেন। আব্বাকেও গতকাল হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে, তিনি বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন। তবে আম্মা এবং ভাবী- এই দুইজনের অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। দুইজনকেই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। প্রিয় কমিউনিটির ভাই-বোনেরা, আপনারা জানেন যে, আমি প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছি। করোনা মহামারির শুরু থেকে কমিউনিটির মানুষদের সচেতনতা এবং সহযোগিতায় আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং আমার পত্রিকা এলএ বাংলা টাইমসের মাধ্যমে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। অনেক করোনা রোগীকে সরাসরি সহযোগিতা করেছি। চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা, বাসায় বাজার করে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। এসব কাজের পেছনে আমার ব্যক্তিগত কোনো উদ্দেশ্য বা স্বার্থ কখনোই ছিল না। কমিউনিটির নেতা হওয়ার জন্য বা নিজের নাম প্রচারের জন্য আমি কখনো এসব করিনি। নিজের বিবেকের তাড়নায়, মানবিক দায় থেকে শুধু কমিউনিটির স্বার্থে কাজ করে গেছি। কাউকে কোনোভাবে সহযোগিতা করতে পারলে আমি আনন্দ পাই। এই অভ্যাস আমার ছোটবেলা থেকেই গড়ে উঠেছে। আমার এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে যদি কারো সামান্যতম উপকার হয়ে থাকে, তবে তার বিনিময়ে আজ আমি আপনাদের কাছে, কমিউনিটির ছোট-বড় সবার কাছে বিনীতভাবে আমার আম্মা এবং ভাবীর জন্য বিশেষ দোয়া কামনা করছি। আল্লাহ যেন আমার আম্মা এবং ভাবীকে দ্রুত সুস্থ করে আমার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন। আমি সবার কাছে দোয়া কামনা করছি, আল্লাহ তায়ালা কার দোয়া কবুল করবে আমরা তা জানি না। এখানে উল্লেখ্য, কেউ ভাবতে পারেন আমি মহামারির সময়ে ঘরের বাইরে বের হওয়ায় বা করোনা রোগীদের সহযোগিতা করতে তাদের সংস্পর্শে যাওয়ায় আমার পরিবার আক্রান্ত হয়েছে। বাস্তবে তা নয়। করোনা মহামারি শুরুর পর আমি বাইরে থেকে ঘরে ফিরে কখনো আব্বা-আম্মা বা কারো সাথে দেখা হওয়ার আগেই বাথরুমে গিয়ে গোসল করে সব কাপড়-চোপড় ধুয়ে ফেলি। যেসব করোনা রোগীদের বাজার বা ওষুধ বাসায় পৌঁছে দিয়েছি, তাদের সংস্পর্শে কখনো যাইনি। তাদের বাসায় প্রবেশ করিনি কিংবা কারো সাথে দেখা করিনি। আমি বাজারগুলো বাসার সামনে রেখে চলে এসেছি, উনারা পরে নিয়ে গেছেন। এভাবে বাইরে যথাসম্ভব সবধরনের সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেছি। তবু কীভাবে আমার পরিবারের সবাই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, একমাত্র আল্লাহ জানেন। আজ সবার কাছে আমার একটাই অনুরোধ, আমার পরিবারের জন্য আপনারা একটু দোয়া করুন। আল্লাহ সবাইকে এই মহামারি থেকে হেফাজত করুন। আব্দুস সামাদ সিইও, এলএ বাংলা টাইমস