লস এঞ্জেলেস

ক্যালিফোর্নিয়ায় খামারের জন্য নতুন নীতিমালা, বাড়তে পারে মাংসের দাম

আগামী বছরের শুরু থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার পশু খামার ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা হবে। ২০১৮ সালে পাশ হওয়া প্রাণী কল্যাণ প্রস্তাব অনুযায়ী আগামী বছর থেকে শূকর, ডিম পাড়া মুরগী ও বাছুরদের থাকার স্থান বড় করতে হবে। যাতে প্রাণীগুলো গাদাগাদি করে না থাকে। জাতীয় বাছুর ও ডিম উৎপাদকরা আশাবাদী যে তারা নতুন প্রস্তাবটি মেনে চলতে পারবে। অপরদিকে, শূকর খামারগুলোর মধ্যে মাত্র শতকরা ৪ ভাগ খামার নতুন নিয়ম পালন করছে। যদি রাজ্য সরকার কিংবা আদালত সাময়িক সময়ের জন্য রাজ্যে নিয়ম ভঙ্গকারী খামারদের মাংস বিক্রি করতে না দেয়, তাহলে রাজ্যে ভয়াবহ রকমের মাংসের অভাব দেখা দিবে। জানুয়ারির আগে আগে পুরো খামার ব্যবস্থায় পরিবর্তন না আনলে,খামারীরা ক্যালিফোর্নিয়াতে শূকরের মাংস সরবরাহ করতে পারবে না। দেশে উৎপাদিত মোট শূকরের মাংসের শতকরা ১৫ ভাগ ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে সরবরাহ করা হয়। প্রতি মাসে ক্যালিফোর্নিয়ার রেস্টুরেন্ট ও মুদি দোকানগুলো ১১ কোটি কেজি শূকরের মাংস বিক্রি করে। এর মধ্যে মাত্র ২ কোটি শূকরের মাংস রাজ্যের ভিতরে উৎপাদন করা হয়। নর্থ ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভার্সিটির একজন অর্থনীতিবিদ বেরি গুডউইন জানান, নতুন নিয়মমালার কারণে শূকর উৎপাদনের খরচ পূর্বের চেয়ে শতকরা ১৫ ভাগ বেশি বৃদ্ধি পাবে। হাটামিয়া গ্রুপের একটি গবেষণা মোতাবেক জানা যায়, যদি ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে হঠাত করে শূকরের মাংসের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় তাহলে মূল্য শতকরা ৬০ ভাগ বৃদ্ধি পাবে। এই হিসাব মোতাবেক, ৬ ডলারের একটি মাংসের প্যাকেটের মূল্য তখন ৯ দশমিক ৬ ডলারে পৌঁছাবে। ক্যালিফোর্নিয়ার খাদ্য ও কৃষি বিভাগ জানায় যে এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণ নীতিমালা প্রকাশ না করা গেলেও নীতিমালার মূল কথাগুলো বহু আগেই প্রকাশ করা হয়েছে। শূকরের মাংস উৎপাদকরা নীতিমালাটির বিরুদ্ধে মামলা করলেও আদালত তাদের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। জাতীয় শূকর উৎপাদক কাউন্সিল ও ক্যালিফোর্নিয়ার অধিকাংশ রেস্টুরেন্ট এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গভ। গেভিন নিউসমের কাছে নীতিমালা বাস্তবায়নের সময় পিছানোর আবেদন করেছে। বর্তমানে শূকরের খামারগুলোতে ২০ স্কয়ার ফুট জায়গায় একদল শূকরকে রাখা হয়। নতুন নীতিমালা অনুসারে, ২৪ স্কয়ারফুট জায়গায় একদল শূকরকে রাখতে হবে। এর ফলে শূকরগুলো নড়াচড়া করার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পাবে।

আইওহা রাজ্যের শূকরচাষী ডোয়াইট মগলার জানান যে নতুন নীতিমালা পালন করতে হলে তার ৩০ লাখ ডলার ব্যয় করে খামারকে পুনর্নির্মাণ করতে হবে। এই বিশাল অংকের টাকা যোগানোর জন্য প্রতি শূকরে মূল্য ২০ ডলার করে বাড়াতে হবে। ক্যালিফোর্নিয়ার নতুন নীতিমালা কসাইখানাগুলোর জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। নতুন নীতিমালার কারণে, কসাইখানাগুলোর এখন একটি নতুন পদ্ধতি বানাতে হবে যার মাধ্যমে অতি সহজেই ক্যালিফোর্নিয়ার জন্য বরাদ্দকৃত মাংসগুলোর হিসেব রাখা যাবে। অবশ্য, গবেষকরা জানিয়েছে যে ক্যালিফোর্নিয়াতে শূকরের দাম বৃদ্ধি পেলেও অন্যান্য রাজ্যগুলো মূল্য আগের মতোই থাকবে। হয়তোবা এই নীতিমালা একসময় পুরো দেশ জুড়ে প্রযোজ্য হবে। এলএবাংলাটাইমস/এমডব্লিউ