লস এঞ্জেলেস

ক্যালিফোর্ণিয়া বিএনপি'র বিজয় দিবস উদযাপন ও কর্মসূচি ঘোষণা।

 গত ১৬ই ডিসেম্বর বুধবার, ক্যালিফোর্ণিয়া বিএনপি'র উদ্যোগে লস এঞ্জেলেসে বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস পালন করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেছেন ক্যালিফোর্ণিয়া বিএনপি'র সংগ্রামী সভাপতি জননেতা মো. আ. বাছিত। বিপুল সংখ্যক স্হানীয় বিএনপির নেতাকর্মী সমর্থকরা অনুষ্ঠানে উপস্হিত ছিলেন। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানে আলোচনা ও গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন অতিথিরা। পাশাপাশি আগামী ২৭শে ডিসেম্বর রবিবার, ডাউনটাউন লস এঞ্জেলেসের নিকটবর্তী প্রবাসী বাংলাদেশী অধ্যুষিত 'লিটিল বাংলাদেশ' এলাকার শ্যাটো রিক্রিয়েশন সেন্টারে ক্যালিফোর্ণিয়া বিএনপি'র উদ্যোগে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে 'শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা' অনুষ্ঠিত হবে বলে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সেদিন বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান হবে বলে জানা গেছে।

ক্যালিফোর্ণিয়া বিএনপি'র সভাপতি মো. আ. বাছিত বলেন, বর্তমান পরিস্হিতিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্রকে বিপদমুক্ত করতে মহান বিজয় দিবসের প্রেরণায় জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে দেশ শত্রুমুক্ত হলেও চক্রান্তকারীরা এখনও রয়েছে। তারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে গ্রাস করে আমাদের একটি পদানত জাতিতে পরিণত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত। ঐ অশুভ শক্তি নানাবিধ চক্রান্তজাল তৈরি করে বহু ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বিপন্ন করে চলেছে। সেজন্য ৫ই জানুয়ারির প্রহসনের একতরফা নির্বাচন করে জনমতকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময়ে আমাদের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে, বারবার জনগণের মৌলিক ও মানবিক অধিকার খর্ব হয়েছে।

কিন্তু প্রতিবারই এদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় বাংলাদেশের মানুষ লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধার করেছে। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাক-হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাংলার মানুষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লে মেজর জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। যে ঘোষণার মধ্য দিয়েই হতবিহ্বল জাতি খুঁজে পায় মুক্তির পথ।

জিয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাড়ায় বাংলার মানুষ, গড়ে তোলে প্রতিরোধ, শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ চলে। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত আর আড়াই লাখ মা-বোনের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের বিজয় অর্জিত হয়। এই বিজয়ের মধ্য দিয়েই বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশের আত্নপ্রকাশ ঘটে। সেদিন জানমালের সীমাহীন ত্যাগের মাধ্যমে মাতৃভূমিকে স্বাধীন করে আমরা পেয়েছি একটি নতুন মানচিত্র, একটি নতুন পতাকা। আজকের দিনে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদকে। স্মরণ করি স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে। স্মরণ করি সকল মুক্তিযোদ্ধাকে। তাদের কাছে এ জাতির ঋণ কোনদিন শেষ হবেনা। অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা, বক্তব্য ছাড়াও বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সকল মুক্তিযোদ্ধার রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন: ক্যালিফোর্ণিয়া বিএনপি'র সিনিয়র সহ-সভাপতি মুর্শেদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মাহতাব আহমেদ, সামসুজ্জোহা বাবলু, মাহবুবুর রহমান শাহীন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডাব্লিউ আমিন, যুগ্ম সম্পাদক বদরুল এ চৌধুরী শিপলু, এম ওয়াহিদ রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হাওলাদার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মারুফ খান, যুব বিষয়ক সম্পাদক লায়েক আহমেদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ নাসিরউদ্দিন জেবুল, তরুন বিএনপি নেতা বদরুল আলম মাসুদ, ফালিক মিয়া প্রমুখ। ক্যালিফোর্ণিয়া বিএনপি আয়োজিত মহান বিজয় দিবসের এ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেছেন দলের যুগ্ম-সম্পাদক বদরুল এ চৌধুরী শিপলু। সবশেষে অতিথিরা সকলে একত্রে নৈশভোজে অংশ নেন।