লস এঞ্জেলেস

লস এঞ্জেলেস কনস্যুলেট অফিসে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন

লস এঞ্জেলেসে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসে যথাযথ মর্যাদায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৭তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত হয়েছে। গত ১৭ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় এ উপলক্ষে নানা আয়োজন করে কনস্যুলেট অফিস।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহাসহ কনস্যুলেট অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ (ক্যালিফোর্নিয়া শাখা)  আওয়ামীলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান শফিক, সেক্রেটারি ড. রবি আলম, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা দারাবিল্লাহ, ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি সোহলে রহমান বাদলসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন ভাইস কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ ইদ্রিস। লিটল বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সিনিয়র কমিউনিটি নেতা মোমিনুল হক বাচ্চু, শামীম হোসাইন ও আখতার মিয়া প্রমুখ, বেঙ্গলী-আমেরিকান হিন্দু সোসাইটির নেতৃবৃন্দ। অন্যান্যের মধ্যে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পদক নজরুল আলম, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা টিয়া হাবিব, ফ্রেন্ডস ক্লাবের সভাপতি ফেরদৌস খান, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সদস্য আলী আহমদ ফারিস ও জাসিম আশরাফী এবং কমিউনিটি নেতা মোহাম্মদ আলী।

এসময় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধুর রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন ভাইস কনসাল মোহাম্মদ ইদ্রিস।

দ্বিতীয় পর্বে কমার্শিয়াল কনসাল মনিরুজ্জামানের পরিচালনায় প্রথমে কোরআন, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিঠক পাঠ করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আব্দুল হামিদের বানী পাঠ করেন কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণী পাঠ করেন কমার্শিয়াল কনসাল মনিরুজ্জামান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদের বাণী পাঠ করেন ভাইস কনসাল সুদিপ্তা আলম। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাণী পাঠ করেন ভাইস কনসাল মোহাম্মদ ইদ্রিস।

শিশুদের নিয়ে বিশাল আকারের কেক কাটেন কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহা। পরে উপস্থিত সবার মাঝে কেক বিতরণ করা হয়।

এসময় দুই শিশু বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ইংরেজি ও বাংলায় আলোচনা উপস্থাপন করে।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ, মুক্তিযুদ্ধসহ জীবনী নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

এ উপলক্ষ্যে প্রবাসী বাংলাদেশী শিশুকিশোরদের নিয়ে চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় ২০ জন শিশুকিশোর অংশ নেয়। শিশুরা অত্যন্ত আকর্ষণীয়ভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি অংকন করে।

বিপুল সংখ্যক প্রবাসী নেতৃবৃন্দ, সাংস্কৃতিক সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও বাংলাদেশী আমেরিকান নতুন প্রজন্মের উপস্থিতিতে প্রতিযোগিদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। বাচ্চাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহা।

সংক্ষিপ্ত আলোচনায় কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহা উপস্থিত সকল কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিকসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

জাতির জনকের জীবনী আলোচনা করতে গিয়ে প্রথমেই তিনি বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সকল সদস্যদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হত না। তাই বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ এই দুটি নাম এক সূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধুর পুরো জীবনটাই ছিল একটি সংগ্রামের। সেই সংগ্রাম ছিল দেশের মানুষের জন্য। সারা জীবন তিনি দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নিয়োজিত ছিলেন। তাই জীবনের বেশিরভাগ সময় তাঁকে কারাগারে কাটাতে হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা হচ্ছে, এই মহান নেতাকেও প্রাণ দিতে হয়েছে কিছু দুষ্কৃতিকারীদের হাতে। আজকের এই মহান দিনে আমরা তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

কনসাল জেনারেল এসময় বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরেন। দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের রেমিটেন্স বিপুল পরিমাণ অবদান রাখছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সবশেষে শিশুকিশোরদের অংশগ্রহণে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়। অনুষ্ঠানে শিশুরা দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করে।

পরে অতিথিদের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করে লসএঞ্জেলেস কনস্যুলেট অফিস।